ভোলার পঃ ইলিশায় প্রভাবশালীদের ইন্ধনে অসহায় পরিবারের জমি দখলের পায়তারা

0
203

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ভোলার পশ্চিম ইলিশায় একটি প্রভাবশালী চক্রের ইন্ধনে অসহায় পরিবারের পৈত্রিক জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ মামলা চলার পর জমির প্রকৃত মালিক মোঃ ভুট্ট গংদের পক্ষে রায় দেয় মহামান্য হাইকোর্ট। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ভূমিদস্যু জাহাঙ্গীর গংরা। জমি দখলে বাধা দেওয়ায় গত ২৪ মার্চ-২০ তারিখ জমির মালিক ভুট্টকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ভূমিদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনী। হামলার পর থেকে অসহায় ভূট্ট পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে জাহাঙ্গীর গংরা। ভূমিদস্যুদের হামলার আতংকে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে ভুট্ট পরিবার। জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অসহায় মোঃ ভুট্ট তার পরিবারের লোকজন। ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরপাতা গ্রামের বান্দেরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জমির মালিক ভূক্তভোগী মোহাম্মদ ভুট্ট লিখিত অভিযোগে জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর আগে স্থানীয় ফজলুল হক, জালাল আহমেদ, বজলু রহমান গংদের কাছ থেকে তার পিতা রুহুল আমিন ৯৬শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত ৯৬ শতাংশ জমি ও পূর্বের জমির সমন্বয়ে রুহুল আমিন একটি মাছের ঘের তৈরি মাছ চাষ করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ রুহুল আমিন ওই জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন। ২০০৮ সালে স্থানীয় মাইনুদ্দিনের কাছে থেকে একই এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর দুটি জাল দলিল নিয়ে রুহুল আমিনের ক্রয়ককৃত ৩৪শতাংশ জমি দাবী করে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার ঝগড়া বাধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা শালিশের মাধ্যমে রুহুল আমিনকে জমি বুঝিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ওই জমি নিয়ে রুহুল আমিন ও জাহাঙ্গীর আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন পর হাইকোর্ট মামলার রায় রুহুল আমিনের পক্ষে দেয় এবং জাহাঙ্গীরের দুটি দলিল বাতিল করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ-২০) ভূমিদস্যু মোঃ জাহাঙ্গীর, তার জামাই ই¯্রাফিল, হিরন লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রুহুল আমিনের ঘেরে প্রবেশ করে গাছ-গাছালি কাটতে শুরু করে। এসময় মাছের ঘেরে থাকা রুহুল আমিনের ছেলে মোঃ ভুট্টু এগিয়ে আসলে জাহাঙ্গীর, ই¯্রাফিল হিরন তাকে এলোপাথারী মারধর ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি রুহুল আমিন ও তার ছেলে ভুট্ট স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানান।
মোঃ ভুট্ট আরও জানান, ইলিশা ব্রিকস ফিল্ডের মালিক মোঃ মাকসুদুর রহমান কিছুদিন আগে ইটভাটার জন্য তার ঘের থেকে মাটি চায়। মাকসুদুর রহমানকে মাটি না দেওয়ায় সে জাহাঙ্গীর গংদের সাথে জড়িত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে ৫ লক্ষ টাকা নেওয়ার মিথ্যা জবানবন্দী দেয়। ২৪ মার্চ-২০ তারিখের ঘটনাটি মাকসুদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর গংদের একটি সাজানো নাটক ছিলো। তবে এ ব্যাপারে ইলিশা ব্রিকস ফিল্ডের মালিক মোঃ মাকসুদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।
ভুট্ট জানান, জাহাঙ্গীর খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। সে এই জমি নিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। হাইকোর্ট ভুট্টর পক্ষে রায় দিলেও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইব্রাহিমের ইন্ধনে ভূমিদস্যু জাহাঙ্গীর গংরা দলবল নিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের পায়তারা করছে। মোহাম্মদ ভুট্ট পরিবারকে নারী নির্যাতন মামলার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে জাহাঙ্গীর বাহিনী। ভূমিদস্যুদের ভয়ে ভুট্ট পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর গংদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
পশ্চিম ইলিশা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ গিয়াস উদ্দিন এ ব্যাপারে বলেন, ভুট্ট ও জাহাঙ্গীর গংদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে অনেক আগ থেকে বিরোধ চলছে। কিছুদিন আগে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাটি আমি শুনেছি। দুপক্ষের কাগজপত্র নিয়ে বসার জন্য বলেছি।

LEAVE A REPLY