ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। মৌলভীবাজারে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তোফায়েল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, এ পর্যন্ত বন্যার স্রোতে ভেসে গিয়ে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তবে গতকাল রাতে মৌলভীবাজার শহরের উত্তর মোস্তফাপুর এলাকায় পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে নিহত একজনের নাম সোবহান বলে জানা যায়।
জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম জানান, জেলার একটি পৌরসভা ও চারটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ১০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, আজ সকাল ১০টায় মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাট পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মনু রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ও কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
উজানে ভারতের উত্তর ত্রিপুরায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে মনু নদীর বারইকোনাতে প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার মোস্তফাপুর এবং কনকপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শহরের বড়হাট এলাকায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করতে সেনাবাহিনীসহ স্থানীয় জনগণ কাজ করে যাচ্ছে। রাতে হঠাৎ এই ভাঙনের ফলে ঘরে আটকা পড়েন অনেকেই। অনেকেই বাড়ির দোতলায় আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত কয়েক দিনের এই অব্যাহত বন্যায় মনু ও ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ২৫টি ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে এই বন্যার সৃষ্টি হয়।
মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাটে মনু নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরে মনু নদীর পানি ও কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দুর্যোগ মোকাবিলা, উদ্ধারকাজ ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়াও সার্বিক তদারকিতে রয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও মৌলভীবাজার পৌরসভা।