জনগণের ভালবাসা নিয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাই – গোলাম নবী আলমগীর

0
1800

ভোলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট নেট এর একান্ত সাক্ষাৎকারে আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর বলেন ,আমি জনগণের ভালবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর সৎ, নির্ভিক, ন্যায়পরায়ণ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে দ্বীপজেলা ভোলাতে তিনি সর্বজন পরিচিত। ভোলা পৌরসভার সাবেক ৩ বারের সফল চেয়ারম্যান ও মেয়র, সাবকে মন্ত্রী ভোলার গণমানুষের নেতা মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহাজান এর ছোট ভাই, ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি ও ভোলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এর সাথে জড়িত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা জনসাধারনের দাবি অনুযায়ী ভোলা-১ আসনের প্রার্থী হতে যাচ্ছেন তিনি। বড় ভাই মোশারেফ হোসেন শাজাহান এর আদর্শ পারিবারিক ঐতিহ্য ও জনসাধারনের ভালবাসার মধ্যদিয়ে বেঁচে থাকতে চান তিনি। আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোলা সদর আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়ে সেবা করতে চান ভোলাবাসীর। বড় ভাই মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান এর রেখে যাওয়া অবাস্তবায়িত স্বপ্নগুলো পূূরণ করতে চান তিনি। ভোলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট নেট এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ভোলা-১ আসনের বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ভোলা জেলার বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর।

প্রশ্ন ঃ আপনি কেন রাজনীতিতে এসেছেন…?
আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর ঃ আমরা আসলে ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক পরিবার। আমার বড় ভাই মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান ১৯৬৫ সাল থেকে ভোলাতে রাজনীতি করেছেন। তিনি কয়েক বার ভোলা থেকে এমপি ও ২বার মন্ত্রী হয়েছেন। আমার পিতা ও তার পূর্বপুরুষরা ভোলার সামাজিক উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমিও পূর্বে পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও ভোলা পৌরসভার ২বার চেয়ারম্যান ও ১ বার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ  ক্ষমতা আসার পর ভোলা জেলা বিএনপিকে পুুনরায় সু-সংগঠিত করার জন্য আমার বড় ভাই মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান ও ভোলাবাসীর অনুরোধে রাজনীতিতে আসি। ২০০৯ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাকে ভোলা জেলা বিএনপির দায়িত্ব দেন। আমি ভোলার সন্তান। আমার জন্ম, বেড়ে উঠা থেকে শুরু করে সবকিছুই ভোলাতে। আগামী দিনেও আমি ভোলাবাসীর পাশে থাকবো ইনশাহ আল্লাহ।
প্রশ্ন ঃ মরহুম মোশারফ হোসেন শাজাহান এর শূণ্যতা কিভাবে পূরণ করবেন…?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ আসলে মোশারেফ হোসেন শাজাহানের তুলনা তিনি নিজেই..! তার সাথে আমাকে তুলনা করা বোকামি। তিনি অনেক বড় মানের নেতা ছিলেন। আমি তার উত্তরসূরী হয়ে তার অবাস্তবায়ীত স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চাই। আমি ভোলার সন্তান। আমার পূর্ব পুরুষ থেকেই ভোলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। গণমানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। ভোলার মানুষের বিপদে আপদে, সুখে দু:খে পাশে থাকাই আমার রাজনীতির উদ্দেশ্য। চাকচিক্যময় প্রদর্শনের নাম রাজনীতি নয়। আমার বড় ভাই মরহুম মোশারফ হোসেন শাজাহানও ভোলাতে সাধারন মানুষের মধ্যে মিশে গিয়েই মানুষের মনের মনিকোঠায় অবস্থান করে নিয়েছেন। আমিও তাকেই জীবনের আদর্শ হিসেবে নিয়ে গণমানুষের রাজনীতিকেই বেছে নিয়েছি।

প্রশ্ন ঃ বিএনপি রাজনীতিতে ভোলায় জোটের একটা হিসাব আছে, সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী…?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ আমরা জাতীয়তাবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের মাটিতে জনসাধারনের অধিকার কায়েম করতে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে পুনরায় গনতন্ত্র কায়েমের জন্য যারা আমাদের মতো জাতীয়বাদী মতোদর্শে বিশ্বাসী, তাদের সাথে আমরা জোট করেছি। আমাদের জোটবদ্ধ হওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। আমরা ভোলা জেলার বিএনপি এ ব্যাপারে বরাবরই উদারতা দেখিয়েছি। ১৯৬৫ সাল থেকে ভোলা ১ আসন মরহুম মোশারেফ হোসেন শাজাহান এর ঘাঁটি, বিএনপির ঘাঁটি হওয়া সত্যেও আমরা ২০০৮ সালে দেশের এবং দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আন্দালিভ রহমান পার্থকে সমর্থন দিয়েছি। বিগত দিনে আমরা যতটুকু উদার হয়েছি, আমাদের ভোলার (বিজেপি)’র সাবেক এমপি ততটুকুই সরে দাঁড়িয়েছেন। বিএনপির অনেক পরিশ্রমের ফসল তাকে আমরা নির্বাচিত করেছি। আপনারা ভোলার মানুষ জানেন তাদের দল বিজেপি অত্যান্ত ছোট একটি দল, তা নিয়ে নির্বাচন করা বা নির্বাচনী বৈতরী পার হওয়া কঠিন। আমাদের দল বিএনপি তাকে নির্বাচিত করার পর তিনি নিজের দলের নেতাকর্মীদের ভাগ্য ফিরিয়েছেন। তারপর যখন আন্দোলন শুরু হলো আমাদের বিজেপির সেই এমপি আমাদের কোন খোঁজ খবর নেননি এমনকি তার যেসব কর্মী হোন্ডা নিয়ে ঘুরতেন তাদেরকেও আমরা রাজপথের আন্দোলনে পাইনি। আমরা এমন প্রার্থীকে চাইনা শুরু এমপি হওয়ার জন্য আমাদের ভোট দিয়ে নিজের দলের উন্নয়ন করবেন। পরবর্তীতে কোন খোজখবর নিবেন না। ভোলা বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের দাবী বিএনপি থেকেই জেলায় প্রার্থী দেওয়া হোক।
প্রশ্ন ঃ বিএনপি কী আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? করলে ভোলার প্রার্থী কিভাবে নির্বাচন করবেন?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ বিএনপি সবসময় নির্বাচনমূখী দল। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আমরা অব্যশই নির্বাচনে যাবো। আর ভোলা যেহেতু সবসময় বিএনপির ঘাঁটি। ২০০৮ সালে বিজেপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার পার্থকে আমরা সমর্থন করেছি। আমরা অনেক পরিশ্রম করে তাকে বিজয়ী করেছি। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হয়ে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেননি। তার দল নিয়েই তিনি ব্যস্ত ছিলেন। কোন আন্দোলন সংগ্রামে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া আমাদের ঘাঁটিতে বার বার পরগাছা আশ্রয় দিতে পারিনা। ভোলাতে বিএনপির প্রার্থীই করবে।

প্রশ্ন ঃ শোনা যাচ্ছে বিএনপির একটি অংশ বিজেপি প্রার্থীর সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের সাথে মাঠে নামছে। এব্যাপারে আপনার মতামত কী..?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ ভোলাতে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে। ধানের মাঝে দুই একটা চিটা থাকে এটাই স্বাভাবিক। তার মানেই এটা না যে সবগুলোই ধান চিটা। বিএনপি একটি বড় দল। এখানে দুই চার জন স্বার্থান্বেষী লোক থাকতে পারে। তাতে বিএনপিতে কোন প্রভাব পড়বেনা।

প্রশ্ন ঃ আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে আপনার মতামত কী…?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ দেশে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে আমরা অব্যশই নির্বাচনে যাবো। ভোলা বিএনপির দূর্গ এখানে অন্য কারো উপস্থিতি ভোলার জনগন মেনে নেবে না। বাংলাদেশে বড় দুইটি রাজনৈতিক দল  আওয়ামী লীগ-বিএনপি। পূর্বে আমরা ভোলাতে সবসময় আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করেছি। আল্লাহ সহায় থাকলে এবারও আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে ভোলা আসনে জয়ী হবো।

প্রশ্ন ঃ আগামী নির্বাচনে মননোয়নের ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
গোলাম নবী আলমগীর ঃ আমাদের নেত্রী বিএনপির চেয়ারপারর্সন জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুবই বিচক্ষনতা ও বুদ্ধিমতার পরিচয় দিয়ে বিএনপিকে আজ জনগনের বৃহৎ দলে পরিনত করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি কয়েকবার সরকার গঠন করে সুনামের সাথে দেশ পরিচালনা করেছেন। বর্তমানে বিএনপি ১৯ দলীয় জোট গঠন করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে তিনি অবশ্যই দ্বীপজেলা ভোলার গণমানুষের কথা বিবেচন করে মননোয়ন দিবেন এটা আমার ও দলের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস।
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ভোলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম কম এর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
গোলাম নবী আলমগীর ঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র পক্ষ থেকে ভোলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

LEAVE A REPLY