আরিফ উদ্দিন রনি: ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট :গ্রামপতনের সেই শব্দ এখনো থামেনি বরং বেড়েছে। একেকটা দুর্যোগ আসে আর গ্রাম আরও ক্ষয়ে যায়। সেই ক্ষয়গ্রস্ত গ্রাম তখন আর তার মানুষগুলোকে ধরে রাখতে পারে না, তারা হয় দেশান্তরী। যাদের কাছে ‘ঘর হইতে আঙিনা বৈদেশ’ তারাও শহর-নগর-বন্দরে ভিড় জমায়। ভাসতে ভাসতে ইহকালে তাদের শেষ মঞ্জিল বস্তি ও ফুটপাতে এসে ঠেকে। তখন আর বোঝার উপায় থাকে না, ঘর-ফসল-মাঠ-বৃক্ষ-এদের পতন গ্রামের পতন, কৃষির পতন। কিন্তু এই পতন সরকারি কোনো কর্মকর্তার হৃদয়ে নাড়া দেওয়ার কথা নয় এমনই একজন মানুষের কর্ম নিয়ে না লিখে আর পারলাম না। মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর নিজাম (সময় দুপুর ২টা) কাঠফাটা রোদ্দুর আইলের মাঝখান দিয়ে হেঁটে আসছেন একজন তার সঙ্গে অনেক নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশু ভেবেছিলাম কোন এনজিও কার্যক্রম। আগ্রহ নিয়ে তাকিয়েছিলাম। কাছে আসতেই দেখলাম তিনি ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আলমগীর কবির। সালাম দিয়ে কুশালাদী বিনিময় করে জানতে চাইলাম এই প্রত্যন্ত অ লে কে এসেছেন। তিনি কথা না বাড়িয়ে সফরসঙ্গী করে নিলেন। হাঁটতে হাঁটতে বলছিলেন গ্রামের ওপর শহরের প্রভুত্ব এবং কৃষকের ওপর বণিকের জোর জারি থাকে। এটাই নাকি প্রগতি! প্রগতির পেরে কিছুটা কাজ করতে গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে যেতে যাচ্ছি। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একান্ত ইচ্ছার কারনে কৃষি ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিযয়ে গেছি। কিন্তু প্রত্যন্ত অ লে মানুষ এখনও নানাবিধ সুযোগ সুবিধার বাইরে। আলমগীর কবিরের সাথে কথা হয় কৃষি নিয়ে। তিনি বলেন, এ ঘোর অকালে আমাদের হুঁশ হয়েছে যে ‘সভ্যতার’ তলানিতে গাদ হয়ে পড়ে থাকা কৃষকপুঞ্জই আমাদের অন্নদাতা। অন্নের অভাব এক টানে উঠিয়ে এনেছে সেই পুরাতন প্রশ্ন? জাতীয় অর্থনীতিতে কী হবে কৃষির ভূমিকা? কাজেই দুনিয়া জুড়ে কৃষি অর্থনীতি বিকাশের খাত খতিয়ে দেখছেন অল্প কিছু মানুষ। তাদের মতন আমিও কিছু কাজ করতে চাই। কারো কাছে এটা সঙ্কট আবার কারো কাছে এটা পুঁজি।
হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেলাম একটি কুঁড়েঘরে দিকে। সেখানে কথা হয় বিবি শাহিনুর (৩৫) এর সাথে। চরের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করতেই কান্নায় জড়িত কন্ঠে শাহিনুর বলেন, ঝড় বাদল আইলে আমাগো অনেক কষ্টের মইধ্যে থাকতে হয়। অনেক দিন পর শহরের মানুষ দেখে অবাক শাহিনুর। কাঁদতে কাঁদতে শাহিনুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর কবিরের উদ্দেশ্যে বলেন, জন্মের দুই দিনের মাথায় আমার সন্তান বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। কোন চিকিৎসা পাই নাই ডায়রিয়া হলে মরণ ছাড়া আমাগো উপায় নাই। খেয়া পার হয়ে চরফ্যাশন পর্যন্ত যেতে অনেক রোগী পথেই মারা যায়। যদি হাসপাতাল পর্যন্ত রোগী নিয়ে পৌঁছানো যায়। সেখানে গিয়েও ডাক্তার দেখা পাইনা। অভাব অনটনের সংসারে কেউ অসুস্থ্য হলে চিকিৎসা খরচ মিটাতে বছরের খোরাক ঘরের চাউল বেঁচে দিতে হয়। স্বামী মারা গেছে তিন বছর হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন বিধবা ভাতার কার্ড পাইনি।
একটু এগিয়ে গিয়ে কথা হয় ওই চরের বাসিন্দা সখিনা বেগম এর সাথে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর কবির সখিনা বেগমকে কেমন আছেন জানতে চাইলে অসহায়ত্ব নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন তার দিকে। হঠাৎ আকুতি মিনুতি করে বললেন, এক বছর আগে নদীতে নাও বাইতে গিয়ে স্বামী মারা গেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর সুইডিশ এনজিও আলারা ১০ শতাংশ জায়গার উপর ছোট টিনের ঘর করে দিছে। ৩ মেয়ে, ১ ছেলে নিয়ে অভাব অনটনে কাটছে আমাগো সংসার। বড় মেয়ের জামাই ডায়রিয়ায় মারা যাওয়ার পর সে এখন আমার সংসারে আছে। তার ভরণপোষন আমার করতে হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে আমার ঘাড়ে চেপে দিয়েছে। তারা আমার মেয়ের খোজ খবর নেয় না। দুই বছর আগে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। চিকিৎসার অভাবে জন্মের কয়েকদিনের মাথায় সেই সন্তানটি মারা যায়।
অসুস্থ্য স্বামীকে নিয়ে দু:খ-কষ্টকে সঙ্গী করে দিন কাটাচ্ছেন নাজমা বেগম। তিনটি সন্তান ছিল তার। একটি সন্তান কিছুদিন আগে অসুস্থ্য হয়ে মারা গেছেন। কিভাবে অসুস্থ হয়েছে জানতে চাইলে নাজমা বলেন জ্বর আর পাতলা পায়খানা হয়েছিল। তখন চিকিৎসার জন্য চরফ্যাশন নেওয়ার পথে নদীর মাঝখানে খেয়ার মধ্যেই মারা যায়। আরেক সন্তান তাও চিকিৎসার অভাবে ৮ বছর বয়সে মারা গেছে। বর্তমানে ১২ বছরের শিশু নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছে। নাজমা বেগমও অন্যের জমিতে কাজ করে সংসারের হাল ধরেন।
চর নিজামের জনপ্রতিনিধি মেম্বার নুর নবীর সাথে বলেন এই চরে আট হাজার জনসংখ্যার বসতি। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই সুবিধা বি ত। চর থেকে চরফ্যাশন উপজেলা পর্যন্ত খেয়া পার হতে সময় লাগে দুই ঘন্টা। বর্ষাকালে ঝড় বাতাসে তাও বন্ধ থাকে। চিকিৎসা সেবার কোন ব্যবস্থা নেই এই চরে। বিনা চিকিৎসায় অনেক মানুষ মারা যায়। ছোট একটি ক্লিনিক স্থাপন করা হলে অনেক ভালো হইত। এখানকার মানুষ চিকিৎসা সেবা এই চরেই পেতো। শিক্ষা ব্যবস্থা প ম শ্রেণীর উপরে নাই এখানে। শিশুরা প ম শ্রেণীর উপরে কোন শিক্ষা লাভ করতে পারে না। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করা গেলে ভালো হতো। রাস্তাঘাটের অনেক দরকার, রাস্তাঘাট করা গেলে কিছুটা ভাল হতো। এখানে বেশিরভাগ জমি খাস কিছু সংখ্যাক মানুষকে বরাদ্দ দিলে তারা কৃষি কাজ করে ভালো থাকতো।
চরের সৃষ্টি তলার একটি গাছের নিচে হোগলা পেতে বসে পড়লেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ভিতরে ভিতরে একটা প্রশ্ন জাগল তাই জিজ্ঞেস করলাম স্যার আপনার মাটির সাথে সম্পৃক্ততা কেন। তিনি বলেন গ্রামের এই সাধারন মানুয়গুলোর মাঝেই নিজেকে খুজে পাই। যখনই সুযোগ পাই ছুটে যাই ভাগ্যবিরম্বিত এই ধরনের মানুষগুলোর কাছে। প্রত্যন্ত অ লে যেখানে ভৌগোলিক কারণে ও প্রাকৃতিক কারণে মানুষ পিছিয়ে পড়ে থাকে। তাদের জন্য কিছু করার এক অদম্য ইচ্ছা ছিল। বাংলাদেশের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়তো অনেকেই পড়তে পারে না। কিন্তু যারা সুযোগ পায় এবং কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয় তারা আর তাদের নিজেদের সেই প্রতিকূলতাকে মনে রাখে না। এই এলাকায় এমন অনেকে ছেলে মেয়ে আছে যাদের মেধা আছে। বাবা-মাও চায় তাদের মানুষ করতে। কিন্তু প্রকৃতির বিরুপ আচরনের কারনে তারা তা পেরে উঠছে না। হয়তো তিন চার বছর পরিশ্রম করে কিছু অর্থ জমিয়ে নিজের ঘরটি ঠিক করেছে। ছেলে মেয়েদের খাবার যোগার করছে। হঠাৎ কাল বৈশাখীর ছোবল কিংবা জলোচ্ছ্বাসে তাদের এই সামান্য সম্বলটি ভেঙে চুরমার করে দেয়। ওই পরিবারগুলো আবার সেই দারিদ্রের বিত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে তাদের জন্য করতে পারাটাই আমার মূল কাজ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর দাপ্তরিকভাবে মুলত রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, ল্যান্ড বা মাটির কাজ করতে হয়। মাটির মানুষের সাথে কাজ করতে হয়। আমাদের বিষয়টা সব সময় কাগজ-কলমে হয়। কিন্তু নিজের ইচ্ছা থাকলে বিত্তের বাইরে গিয়েও কাজ করতে হয়। সেটি অবশ্য সব সময় যে সুখকর তা নয়। এর বিরম্বনাও রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আলমগীর কবির এই প্রতিবেদককে বলেন, ভোলা একটি দ্বীপজেলা এখানে অনেকগুলো চর আছে। ভোলা জেলা সদরও একটি চর ছিল। আজ থেকে ৮০০ থেকে ৯০০ বছর আগে। এখন একটি জেলায় পরিণত হয়েছে। মনপুরা যেহেতু এ জেলার ৭টি উপজেলার ভিতর একটি উপজেলা। এটি জেলার সবচেয়ে দুর্গম উপজেলা এবং মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন। সড়ক যোগাযোগ নেই সেখানে। নৌপথে একমাত্র যোগাযোগ করতে হয়। প্রশাসনিক যোগাযোগ এবং মনিটরিং করা অত্যন্ত কষ্টকর। এই উপজেলার মধ্যে অনেকগুলো চর রয়েছে। এর একটি হচ্ছে চরনিজাম। মনপুরা উপজেলা থেকে প্রায় দুই ঘন্টায় নৌপথে গিয়ে চরে পৌঁছাতে হয়। ৮ হাজার মানুষের বসবাস এই চরে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও নাগরিক সুবিধার বাইরে এলাকাটি রয়েছে। আমি যখন জানলাম চর নিজাম মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। তারপর বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করলাম। নদী পথে যোগাযোগ অনেক কষ্টের। যখন এই চরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম তখন অনেকেই বেশ ভয়ও দেখাল অতীতের প্রকৃতির বিরুপতার কথা বলে। জীবনে কত প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজকের এই পর্যায়ে এসেছি। সৎ সাহস ও ইচ্ছা শক্তি থাকলে অনেক কিছুই জয় করা সম্ভব। সকল বাধা বিপত্তি ও দ্বিধা তুচ্ছ করে স্বচক্ষে দেখার জন্য আজ চলে আসলাম মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে জেগে উঠা চরনিজামে। আবহাওয়ার উপরে নির্ভর করে এখানে যাতায়াত করতে হয়। বছরের ছয় মাস নদী উত্তাল থাকার কারনে এই চরে সহজে যাওয়া যায় না। সরকারিভাবে যেসব এলাকাগুলো চিহ্œিত করে ডেঞ্জার জোন ঘোষনা করা হয়ছে। তার মধ্যেই এই এলাকাও একটি। শুকনো মৌসুমে খেয়া (নৌকা) দিয়ে পারাপার করে এখানকার মানুষ।
আলমগীর কবির আরও বলেন, এখানে অবকাঠামো বলতে একটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ পুলিশ ফাঁড়ি। রয়েছে বন বিভাগ সম্প্রতি একটি বিট কেন্দ্র। এছাড়া আর কোনো অবকাঠামো নেই। স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনো অবকাঠামো তো নেই। নেই কোন সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। দক্ষ চিকিৎসক বা দক্ষতা আছে এমন কেউও নেই প্রসূতি সেবা দেয়ার জন্য। বর্ষার মৌসুমে কেউ অসুস্থ্য হলে ২ ঘন্টা নদী পার হয়ে আসা সম্ভব হয় না। এই চরে এরকম অনেক পরিবার আছে যাদের দু’একজন চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে। এখানে বিভিন্ন মা-বোনদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম সন্তান প্র¯্রব করার সময় ভালো কোনো ধাত্রী পাওয়া যায় না। যার ফলে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময়ে অনেক মায়ের মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, এই চরের বেশিরভাগ পরিবারই নদীতে মাছ ধরে জীবন যাপন করে। মাছ ধরার উপরই মূলত তাদের জীবিকা নির্বাহ করা হয়। এ পর্যায়ের পরিবারের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার জন্য একটি মাত্র স্কুল রয়েছে তাও প ম শ্রেণী পর্যন্ত। যথেষ্ট শিক্ষকের সংকট রয়েছে ওই বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয়টির অবকাঠামোও খুব বেশি উন্নত নয়। প ম শ্রেণী পাস করলেও মাধ্যমিক শিক্ষার কোন ব্যবস্থা না থাকার কারনে অনেকেই পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে নদীতে মাছ ধরতে বাধ্য হয়। যে সব এলাকায় উচ্চবিদ্যালয় রয়েছে, কলেজ রয়েছে সেখানে যেতে নৌপথে ২ ঘন্টা সময় লেগে যায়। বর্ষাকালে কোনো মতেই সম্ভব নয় যাওয়া-আসা করতে করতেই স্কুলের সময় চলে যায়। এই চরে যদি ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে তারা সরকারী চাকুরিতে নিয়োগের সুযোগ পেতো। অধিকাংশ শিশুর উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশুনা থেকে বি ত। এই এলাকাটি যেহেতু সমুদ্রের সাথে যোগাযোগ, সুপেয় পানির প্রয়োজন রয়েছে। পুরো এলাকায় ১০ থেকে ১৫টি টিউবওয়েল থাকলেও এখানকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা আশানুরুপ হচ্ছে না। ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার ফলে এখানকার যোগাযোগ অন্যতম মাধ্যমে হলো জমির আইল। এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায় যেতে হলে জমিনের আইলই হলো এখানকার মানুষের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু ভূমিহীন লোক রয়েছে যাদের ওই চরে ভূমি ব্যবস্থা করার সুযোগ রয়েছে। স-চোখে যখন এই মানুষগুলোকে দেখলাম, তখন মনে হল এই মানুষগুলোর দিকে আমাদের নজর দেওয়া প্রয়োজন। ইতিপূর্বে কেউ এসেছিল কিনা জানিনা। এই চরে আমি আসায় এলাকার মানুষগুলো আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। চরে যাতে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। আপাতত জেলা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে এলাকার কিছু মহিলাকে প্রসূতি সেবা দেয়ার ব্যাপারে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যুর হার কমে। এখানে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রয়েছে সেটিকে যেনো অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সুপেয় পানির জন্য আমরা একটা চিঠি দিয়েছি। চরটি টিকে থাকার জন্য চারিদিকে বাঁধ দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীকে একটি চিঠি দিয়েছি। তারা প্রকল্প গ্রহণ করছে, আশা করছি তিন চার কোটি টাকার একটা প্রকল্প নিয়ে চর রক্ষার’ জন্য বাঁধ দেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য এই চরে রাস্তাঘাট করা হবে। এলাকার বনা ল রক্ষার্থে ও নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে সাধারন মানুষকে রক্ষা করতে এগুলো বাস্তবায় হওয়া খুবই প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে এসডিজি বাস্তবায়ন। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে গেলে চরা লগুলোতে আমাদের অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। শুধু তাই নয়, ভোলা জেলাটি বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার থেকে আর্থসামাজিক স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। জেলা শহর থেকে উপজেলা বিচ্ছিন্ন এ চরগুলোতে যারা বসবাস করে তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে খেয়াল রেখে যদি কাজ করতে পারি তাহলে এসডিজি বাস্তবায়ন দ্রুত সম্ভব হবে। ধন্যবাদ স্যার আপনাকে, আপনার মত মানুষরা আছে বলেই আজ বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এই দেশ। আশা ও ভরসা রয়েছে এদেশের ভাগ্যবিরম্বিত মানুষের।