স্টাফ রিপোর্টার:বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গম পাচারকালে ছবি তোলায় শামিম আহম্মেদ নামে এক সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে। কারাগারের বাইরে সড়ক থেকে তাকে তুলে নিয়ে আটকে নির্যাতন করা হয়।
শনিবার (১২ জানুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে এই ঘটনায় সাংবাদিক নেতাদের তোপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত ৫ কারারক্ষীকে প্রাথমিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তরা হলেন- কারারক্ষী উজ্জল, আবু বক্কর, সাঈদ, আবুল খায়ের ও খোকন।
নির্যাতনের শিকার দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বরিশাল অফিসের আলোকচিত্রী শামিম আহম্মেদ জানিয়েছেন- কারাগার থেকে ভ্যান গাড়িযোগে সরকারি গম পাচার হওয়ার প্রাক্কালে কোতয়ালি পুলিশ আটকে দেয়। ওই সময় তিনি সড়কের দাড়িয়ে সেই চিত্র ধারন করছিলেন। তখন কারা কম্পাউন্ড থেকে ৮ থেকে ১০ কারারক্ষী এসে তাঁর ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তাকে মারতে মারতে কারা কম্পাউন্টের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে তাঁকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে আরও পিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়বাত বরিশাল প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেনসহ সাংবাদিক নেতারা সেখানে ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এনিয়ে সেখানে ঘণ্টাখানের উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করে। সাংবাদিক নেতাদের জোরালে প্রতিবাদে তোপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত ৫ কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে কারা কর্তৃপক্ষ।
সেই সাথে বিষয়টি তদন্ত করে বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিক নেতারা শান্ত হন।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম জানিয়েছেন- কারাগার থেকে গম পাচারের প্রাক্কালে প্রথমে একটি ভ্যান সড়কে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আরেকটি ভ্যান বের হলে তখন সাংবাদিক শামিম আহম্মেদ সেই চিত্র ধারন করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারারক্ষীরা তাকে মারধর করে কারা কমাউন্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। কিন্তু দূরত্ব একটু বেশি থাকার কারণে তাকে সেইভ করা সম্ভব হয়নি।’
এই ঘটনায় ভ্যান দুটির দু’জন চালককে আটক করা হয়েছে। কিন্তু আটক গম বৈধ না অবৈধ সেই বিষয়টি তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন এসআই মাইনুল ইসলাম।
কারারক্ষী বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিআইজি প্রিজন তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন- এই ঘটনায় অভিযুক্ত সকলকে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
এই ঘটনায় সাংবাদিক নেতা যুগান্তর পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো আকতার ফারুক শাহিন জানিয়েছেন- এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বরখাস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সেখান থেকে সরে আসা হয়েছে।’
তবে এই বরখাস্ত সিদ্ধান্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে পরবর্তীতে আন্দোলনের দিকে ধাবিত হবেন।’
এদিকে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ভোলা জেলা শাখার সভাপতি মো: আফজাল হোসেন ও সাধারন সম্পাদক এড.সাহাদাত হোসেন শাহিনসহ সকল সদস্যরা। তারা দায়ীদের দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।