ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেটঃ ইন্টারনেটে সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। চাইলেই ব্রাউজ করে দেখা যায় পর্নো ছবি। বিষয়টি যাতে কেউ বুঝতে না পারে, তাই দেখা শেষে ‘ব্রাউজিং হিস্ট্রি’ মুছে দিয়ে নিশ্চিন্ত হন কেউ কেউ। কিন্তু জানেন কি, পর্নো ছবি দেখার আগে ওয়েবসাইটে ঢুকতেই আপনাকে চিনে রেখেছে ওই সাইট! তাই আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে হিস্ট্রি মুছে ফেললেও ওই সাইটের নজরদারিতে থেকে গেলেন আপনি। চাইলেই তারা যেকোনো দিন আপনার তথ্য কোথাও প্রকাশ করে দিতে পারে।
সম্প্রতি ভারতের ইংরেজি দৈনিক ডেকান ক্রনিকলসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়েবসাইটে পর্নো ছবি দেখা ব্যক্তির তথ্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার। অনলাইন পর্নোগ্রাফি ব্যবহারের জন্য দেশটির সরকার বয়স যাচাইয়ের পদক্ষেপও হাতে নিয়েছে। এর অর্থ হলো বয়স যাচাইয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে নিজের মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণ জানাতে হবে। মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণের সঙ্গে বয়স মিলে গেলেই অনলাইনে পর্নো ছবি দেখতে পারবেন ওই ব্যবহারকারী। আর এতে করেই ব্যবহারকারী সব তথ্য থেকে যাবে ওই ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ ও সরকারে কাছে। এর আগে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে অনলাইনে বয়স যাচাই করা হতো। কিন্তু কিশোর-তরুণেরা বড়দের বা অন্য সদস্যের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পর্নো দেখে। এ বিষয়টি রোধ করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুর দিকে এ–সংক্রান্ত ডিজিটাল ইকোনমি অ্যাক্ট পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। দেশটির ডিজিটাল ইকোনমি মন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ বোর্ড অব ফিল্ম ক্ল্যাসিফিকেশন নামের একটি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কিছু কিছু পর্নো সাইট ব্লক করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ বছরের নিচের কাউকে পর্নো দেখতে অনলাইনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আর নতুন ওই নিয়ম বাধ্যতামূলকভাবে জারি হবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই নিয়মকে দেশটির ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু চিলড্রেন (এনএসপিসিসি) স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করে আসছিল, পর্নো ছবি কোমলমতি তরুণদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
তবে, এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা বলছে, পর্নো সাইটে বয়স যাচাইয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে নিজের মোবাইল ফোন ও পাসপোর্টের বিবরণ জানাতে হবে—এটা ভালো। কিন্তু একই সঙ্গে ব্যবহারকারীর যাবতীয় তথ্য থেকে যাচ্ছে ওই ওয়েবসাইটের ডেটাবেসে। কোনো কারণে হ্যাকাররা ওই তথ্য চুরি করলে ব্যবহারকারীদের সমূহ বিপদ হতে পারে। এ ছাড়া হ্যাকাররা বা ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ চাইলেই ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং হিস্ট্রি প্রকাশ করে দিতে পারে; যা ব্যবহারকারীদের জন্য খুবই লজ্জাজনক ও সম্মানহানির ঘটনা হবে।