তাসলিমার স্বামী হাসান আলী বলেন, তাঁর স্ত্রী তাসলিমার ‘জিনের সমস্যা’ আছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বাজারে চা খেতে যান। পরে রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে ফোন করে তাঁকে জানানো হয়, তাসলিমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর বাড়িতে এসে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এমন সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে শুনতে পান, ওপর থেকে তাসলিমার গলা ভেসে আসছে। তিনি মেয়ের নাম ধরে ডাকাডাকি করছেন। সঙ্গে আরও বলছেন, ‘আমাকে নামাও, ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে।’ এ কথা শুনে বাড়ির পাশে থাকা একটি নারকেলগাছে টর্চলাইটের আলো মেরে দেখতে পান, তাসলিমা গাছের ওপরে ঝুলে আছেন। তখন তাঁকে গাছ থেকে নামানোর চেষ্টা করেও নামাতে পারেননি তাঁরা। পরে মহেশপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তাঁরা এসে তাঁর স্ত্রীকে নামিয়ে দেয়।
প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় ৬০ ফুট উচ্চতার নারকেলগাছ থেকে তাঁকে রশির মাধ্যমে নামানো হয়। এ সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। উদ্ধার শেষে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং ভালো আছেন।
হাসান আলী বলেন, তাঁর স্ত্রীর এ সমস্যার জন্য অনেক কবিরাজ দেখিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
মহেশপুর ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা রমেশ কুমার সাহা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে ফোন আসে, বেগমপুর গ্রামের এক নারী নারকেলগাছের মাথায় উঠে আর নামতে পারছেন না। এমন সংবাদে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় ৬০ ফুট উচ্চতার নারকেলগাছ থেকে তাঁকে রশির মাধ্যমে নামানো হয়। এ সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। উদ্ধার শেষে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং ভালো আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জমির মো. হাসিবুস সাত্তার বলেন, এগুলো মানসিক রোগ। মানসিক সমস্যার কারণে কখনো কখনো রোগীর অবচেতন সত্তা মনে করে, তাঁর শরীরে অনেক শক্তি ভর করেছে। তখন অকুতোভয় হয়ে ওঠেন। এই মানসিক শক্তির জোরে ওই নারী গাছের ওপরে উঠে গেছেন। আর গ্রামের মেয়ে, গাছে ওঠার অভ্যাস আগে থেকে থাকতে পারে। পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বুঝতে পারেন, দুঃসাধ্য কাজ করে ফেলেছেন। তখন সাধারণ ভয়ভীতি ফিরে আসে। এসবকেই গ্রামের লোকজন কুসংস্কারবশত জিন-ভূতের আসর বলে প্রচার করেন। এগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।