ভোলায় তরমুজের ভালো ফলন হলেও মুখের হাসি কেড়ে নিচ্ছে স্থানীয় দালালরা

0
17

মো: আফজাল হোসেন :: ভোলার মাটি অনুকুলে থাকায় চলতি বছরে সাড়ে ৯ লাখ টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। তবে কৃষকের মুখের হাসি কেড়ে নিচ্ছে স্থানীয় কতিপয় দালাল নামের প্রভাবশালীরা। যাদেরকে প্রতিটি তরমুজের বিপরীতে দিতে হচ্ছে ৭থেকে ১০টাকা। এদের কারনে সরাসরি বেপারীদেরকাছে বিক্রি কিংবা মোকামেও পাঠাতে পারছে না কৃষকরা।

দ্বীপজেলা ভোলা তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। যে কারনে গতবছর বেশ ভালো ফলন আর দাম পেয়েছে কৃষকরা। একই সাথে কৃষকরা লাভবান হয়েছে বলেই চলতি বছরে আরো বেশি জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছে। তাইতো জেলায় গত বছরের চেয়ে ৭হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের বেশি চাষাবাদ হয়েছে্। চলতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৭হাজার হেক্টর বেশি। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর। হেক্টর প্রতি তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫২ টন করে। আর মোট তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭৬ টন। বর্তমানে কৃষকদের মুখে হাসি থাকার কথা থাকলেো রয়েছে চরম ক্ষোভ। একটি তরমুজের পিছনে ৭০থেকে ৮০টাকা খরচ থাকলেও মাঠে বিক্রি হচ্ছে ১শত থেকে ১১০টাকা দরে।আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিতে হচ্ছে ৭থেকে ৮টাকা করে। নিজের ফসল নিজে বিক্রি কিংবা গাড়ীতে তুলে দিতে পারছে না কৃসকরা। সবই দালালদের মাধ্যমেই দিতে হচ্ছে বলে প্রতারনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে এসব অসহায় কৃষকরা। জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চরকলমী ইউনিয়নের একাধিক তরমুজের খেতে গেলে একই ধরনের সমস্যার কথা বলেন তরমুজ চাষীরা। চরম ক্ষোভ করে মো: রফিকুল ইসলাম,মো: বেল্লাল হোসেন এবং মো: শরীফ বলেন,রোদ পুড়ে চাষাবাদ করি। লোন আর ধারদেনা করে ফসলাদী ফলাই দুটা আয় করবো বলে,অথচ স্থানীয় নেতা আর প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা দালালী করে.এদের জন্যপারছি না। আমার ফল আমি খেত থেকে কেটে মাথায় করে ট্রাকে পৌছে দিব এবং ২/৪টাকা লাভবান হবে। অথচ তা পারছে না,কারন এসব দালালদের দিতে হবে। আমার তরমুজ আমি দাম দিতে পারি না,এরা এসে দাম ধরে বিক্রি করছে। লেবার তারা দিবে। আমাদের উপর জুলুম করছে এই স্থানিয় নেতাফেতারা। চাষাবাদ করি আমরা আর এরা এসে ফাও টাকা নিয়ে যাবে। আমাদের তরমুজ সরাসরি বেপারীর কাছে আমরা বিক্রি করবো এবং খেতেই টাকা যাতে পাই এজন্য আমরা সরকারের কাছে সহযোগীতা কামনা করছি।

 

এদিকে তরমুজের খেতে কৃষকদের সাথে কথা বলছি দেখে ছুটে আসেন,স্থানীয় প্রভাবশালী (দালাল ) চর কলমী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডর সাবেক মেম্বার মো: আবুল বাশার বাচ্চু এবং একই ইউনিয়নের যুবলীগ সাধারন সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন। তাদের সাথে কথা বল্লে তারা জানান,কৃষকরা সরাসরি বিক্রি করছে না। গাড়ীর চালক কিংবা বেপারীরা কৃষকদের বিশ্বাস করছে না বলেই আমরা সহযোগীতা করছি তাতে আমরাও লাভবান হচ্ছি। খেত থেকে আমাদের লোক দিয়ে ট্রলার কিংবা ট্রাকে তুলে দিচ্ছি তাতে তরমুজ প্রতি ৭/৮টাকা দিচ্ছে আমাদের। এসব দালালরা অসহায় মানুষদের প্রতারনা করে  কৃষকদের কাছ থেকে লোড-আনলোডের নামেও টাকা আদায় করছে বলে্িস্বিকার করে নিলেন,স্থানীয় এসব দালালরা।

 

অপরদিকে বাম্পার ফলনের কথা জানিয়ে উপজেলা কৃষি কমর্কর্তা এএফএম শাহাবুদ্দিন জানান,তরমুজের খেতে পোকার আক্রমন হয়েছে, তবে এজন্য কৃষকদের আমরা প্রশিক্ষন দিয়েো থাকি। এছাড়া সাড়ে ৯লাখ মে: টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে জেলায়। তবে পরিবহন ব্যবস্থা এবং প্রতারনা না হলে কৃষকরা আরো লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

LEAVE A REPLY