ভোলা নিউজ ২৪ডটকম।। চীনে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে করোনার নতুন প্রজাতি বিএফ–৭। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন বিএফ-৭ চারগুণ বেশি সংক্রামক।এটি কম সময়ে অতি দ্রুত বেশি মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। আর তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে ভারতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যেই ভারত সরকার সবগুলো রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলগুলোকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তারইমধ্যে, সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) চীন ফেরত আরও এক প্রবীণ ভারতীয়ের শরীরে মিলল বিএফ–৭। রোববার ওই ব্যক্তি ভারতের কর্ণাটকের কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিলেন। বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি করোনা আক্রান্ত। দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। এরপরই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে জানা যায় ব্যক্তিটি ওমিক্রন বিএফ-৭ দ্বারা আক্রান্ত।
অপরদিকে, গত ২৩ ডিসেম্বর চীন থেকে দেশে ফেরত আসেন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আগ্রা জেলার তাজনগরীর এক যুবক। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) জানা গেল, তিনিও করোনার নতুন প্রজাতি দ্বারা আক্রান্ত। ২৩ ডিসেম্বর চীন থেকে অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পর স্থানীয় একটি ল্যাবে টেস্ট করাতেই করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে তার। সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে ফেরার পর তিনি কতজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা খতিয়ে দেখে স্থানীয় প্রশাসন। এরপরই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে জানা যায় তিনি ওমিক্রন বিএফ-৭ দ্বারা আক্রান্ত।
আক্রান্ত যুবককে ইতোমধ্যে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। বাড়ি সিল করে দিয়েছে প্রশাসন। পরিবারের লোকসহ যারা ওই যুবকের সংস্পর্শে এসেছিলেন, এবার তাদের করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য দফতর।
উত্তরপ্রদেশের চিফ মেডিকেল অফিসার অরুণ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে বছর শেষে বহু মানুষ বিদেশে গেছেন। পাশাপাশি ব্যবসায়ের কাজেও প্রতিদিন মানুষের বিদেশে যাতায়াত বাড়ছে। ফলে বিদেশ থেকে আগতদের নজরে রাখা হচ্ছে। তাদের সাতদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পাশাপাশি তাদের আরটি-পিসিআর পজিটিভ আসলেই সেই নমুনা জেনোম টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।
এর আগে ২১ ডিসেম্বর চারজন ভারতীয়ের শরীরে করোনা ভাইরাসের নতুন ওই প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। তারা গুজরাট ও উড়িষ্যার বাসিন্দা। করোনার নতুন প্রজাতি চীনে প্রভাব বিস্তার শুরু করলেও এত তাড়াতাড়ি ভারতে সন্ধান মিলবে, তা আশা করেননি ভারতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া বলেছেন, চীন, জাপান, হংকং, ব্যাংকক ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগত যাত্রীরা ভারতে অবতরণ করা মাত্রই আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক।
তবে দেশটির চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ জানিয়েছেন, ভারতের অধিকাংশ মানুষের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে মিশ্র প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ায়, চীনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না। তবে নতুন প্রজাতি সমস্যায় ফেলতে পারে দেশটিকে। তাই বিপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের সব রাজ্যকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।