মনপুরা উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি

0
493
All-focus

আদিল হোসেন তপু,ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেটঃ  ভোলার মনপুরায় নিম্ন চাপের প্রভাবে মেঘনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় আধা কিলোমিটার নতুন বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরদোন এলাকার ৪ টি স্থানে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এই সময় ওই এলাকায় জোয়ারের পানির চাপে একই পরিবারের ঘর সহ তিন জন মেঘনায় ভেসে গিয়ে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজরা হলেন একই পরিবারের রুহুল আমিন (৩৫),ইলিয়াছ(৩০),রাহাত (২০)। তাদেরকে খুঁজতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ ট্রলার মেঘনায় উদ্ধার অভিজান চালাচ্ছে। তাদের বাড়ী মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরের দোন এলাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে নিম্ন চাপের প্রভাবে মনপুরার হাজির হাট এলাকার চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরদোন এলাকা সহ সোনরচর, চরযতিন, নাইবেরহাট, ঈশ্বরগঞ্জের বির্স্তীন এলাকা মেঘনা নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ২ হাজার একর আমনের ক্ষেত প্লাবিত হয়।
অপরদিকে উপজেলার প্রাথমিক স্তরের ৪২ স্কুলের চুড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষা সহ ১৬ হাই স্কুল-মাদ্রাসার সমাপনী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নদীপথে ল -সীট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মনপুরা উপকূল। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক রকম আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক, আবদুল, রহিম, বাচ্চু জানান, নতুন আধা কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। তিনজন জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। আমনের ক্ষেত জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। দিনের জোয়ারের চেয়ে রাতের বেলা জোয়ারের পানি বেশি হবে। এতে ঘর-বাড়িসহ সবকিছু ডুবে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
হাজিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক জানান, চৌধুরী বাজার পূর্বপাশে ফকিরের দোন এলাকায় চার স্থানে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। তিনজনকে জোয়ারের পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আমনের ফসলের মাঠ জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে।
উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ল্যান্ডিং স্টেশনের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি। জোয়ারের পানির চাপে হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরের দোন এলাকায় চার স্থানে নতুন আধাঁ কিলোমিটার এলাকায় বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে বির্স্তীন এলাকা।
উপজেলার সকল স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার সোনারচর, নাইবেরহাট, চরযতিন এলাকার বেড়ীবাঁধ জোয়ারের পানি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোন সময় এই সমস্ত এলাকার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া টানা বর্ষন ও বাতাসে উপজেলার সকল হাট-বাজার বন্ধ রয়েছে। মানুষ আতংকগ্রস্থ হয়ে বেড়ীবাঁধের উপর জড়ো হতে দেখা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ হাওলাদার জানান, নতুন বেড়ীবাঁধ এলাকা ভেঙ্গে বির্স্তীন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য। এছাড়াও জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। সকলকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভেসে যাওয়া নিখোঁজ তিন জনকে উদ্ধারে ট্রলার পাঠানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, জোয়ারের পানি কমে গেলে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে দ্রুত বেড়ীবাঁধ মেরামত করা হবে।

 

LEAVE A REPLY