এম শাহরিয়ার জিলন :ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট :ভোলা থেকে চরফ্যাশন পর্যন্ত অনেকগুলো ব্রীজ আছে। এর মধ্যে ১৯৮৭ সালে নির্মিত পাঁচটি স্টিল কাঠামোর বেইলি ব্রীজ রয়েছে। ত্রিশ বছরের অধিক বয়সের এ ব্রীজগুলো যেন আজ মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এখন পাঁচ টনের অধিক যানবাহন চলাচলের সাইনবোর্ড নোটিশ দিয়েই দায়সারা দায়িত্ব সারছে জেলা সড়ক বিভাগ। সাময়িক মেরামত করে চলার ব্যবস্থা ব্রীজগুলোকে মৃত্যু ফাঁদে পরিণত করেছে। এখন আর গার্ডার ব্রীজ ছাড়া ভাবা যাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয় জনগন ও সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী। এ ব্রীজগুলো হলো বাংলাবাজার, বকসে আলী, বোরহানউদ্দিন, ডাওরী ও চরফ্যাশনের শশীভূষণ বেইলি ব্রীজ। জড়াজীর্ণ এই বেইলি ব্রীজগুলো ভেঙ্গে নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন পথচারীরা।
সরেজমিনে পরিদর্শন দেখা গেছে, কয়েক বছরের চলাচলের জন্য তৈরি করা ৯০ দশকের ব্রীজগুলো আজ আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজগুলো চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। একটি বাস পার না হওয়া পর্যন্ত মানুষ, রিকশা ও সাইকেল চলতে পারছে না এ ব্রীজে। বর্ষার সময় বেশি আতঙ্কে থাকতে হয় মোটর সাইকেল আরোহিদের। সামান্য এদিক ওদিক হলেই পিছলে যায় মোটরসাইকেল। অনেকের জীবনহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
এ বিষয়ে ভোলা সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম জানান, ভোলা এখন শিল্পনগরী হিসেবে রূপান্তর হওয়ার পথে। তাই প্রচুর ওভার লোডের ট্রাক, লরি চলাচল করে। বিশেষ করে ভোলায় অনেকগুলো পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হচ্ছে। তাই বড় বড় যন্ত্রপাতিসহ প্রতিনিয়ত এরকম ১২-১৮ চাকার লরি আসা-যাওয়া করছে। এ ছাড়াও তরমুজ, ধান ও সবজির গাড়ি সারা বছর চলাচল করে। এ পর্যন্ত প্রতি বছর কেবল মেরামতই করা হচ্ছে। ভোলা জেলা সড়ক বিভাগ এই ৫টি ব্রীজের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ডিজাইনের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি এ বছরের মধ্যে এর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারবো।
ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ৮০-৯০ জন যাত্রী নিয়ে দশ-বারো টনের ৬০টি বাস প্রতিদিন বিশ মিনিট পরপর ভোলা থেকে চরফ্যাশন চলাচল করে। দশ ফুটের চওড়া এই বেইলি ব্রীজে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে। ভোলা সড়ক বিভাগের সাথে বার আলোচনা করেও আমরা ব্যার্থ হয়েছি। তাই এখন আল্লাহপাকের ওপর ভরসা করে চলছি। যাতে এই ব্রীজগুলো ভেঙে নতুন ভাবে ব্রীজ তৈরি করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
যাত্রী সাধারন জানান, আমরা প্রতিনিয়ত ভোলা টু চরফ্যাশন রুটে বাসে যাতায়াত করি। বাসের ভেতর থেকে বুঝতে পারি ব্রীজগুলো কতটা নড়বড়ে হয়ে আছে। এর ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। মনে হয়, যেন আশি সিটের বাসটা এখনই মানুষসহ ব্রীজ ভেঙে পড়ে যাবে।
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঝূঁকিপূর্ণ এই বেইলি ব্রীজগুলোকে গার্ডার ব্রীজে রুপান্তর করার জোর দাবী জানিয়েছেন ভোলার সাধারন পথচারীরা।