ভোলায় আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুত ৬৫৭ আশ্রয়কেন্দ্র

0
713

ভোলা নিউজ২৪ডটনেট। ।উপকূলে উদ্বেগ বাড়িয়ে মারাত্মক প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ক্রমে ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। ৪৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আরও শক্তিশালী হচ্ছে। পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৬.০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমূদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে ) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনের ২৮ নম্বরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকাল নাগাদ ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তীতে উড়িষ্যা পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় ভোলাতে ৬৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৮টি কন্ট্রোল রুম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় ২২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছেন। ইতিমধ্যে উপকূলীয় চর ও দুর্গম এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণাও শুরু হয়েছে।

ভোলার জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিক  জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় সাত উপজেলায় ৮০ সদস্যের ৮টি টিম গঠন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বুধবার (১ মে) থেকে চরগুলোতে সতর্কতামূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির দুই দফা বৈঠক হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরেও আরেক দফা বৈঠক হবে বলে।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ভোলা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট। এ উপলক্ষে বুধবার (১ মে) বিকেলে আলাদা সভা করেন জেলা প্রশাসক ও  ভোলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট। রেড ক্রিসেন্ট জেলা অফিসে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা।

সভায় ভোলা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারী মো. আজিজুল ইসলাম জানান, রেড ক্রিসেন্টের পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি খাদ্য সরবরাহে চিড়া-গুড় বিতরণের জন্য দোকান ঠিক করে রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় ভোলা আবহাওয়া অধিদফতরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী মাহবুব রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।

LEAVE A REPLY