মো: আফজাল হাসনে :: প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন না করার অপরাধে হাত-ভাঙ্গা ও গুড়া হয়ে যাওয়া নারীসহ ৩জন রোগীর ফাইল ছুড়ে ফেলা দেয়াসহ হাসপাতাল থেকে নাম কেটে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা। চরম ক্ষুব্ধ রোগীর স্বজনসহ জনপ্রতিনিধিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোলা সদর হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে এমন ঘটনা ঘটে। ডা: ফাযজুল হক এর বিরুদ্ধে। অভিযোগে জানাযায়,ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মো: সামসুদ্দিন (৪৫),তার স্ত্রী রেশমা বেগম (৩৫) এবং তার মেয়ে স সাথি (২২) ভোলা সদর হাসপাতালে নভেম্বর মাসের ১১ তারিখ ভর্তি হয়। সামসুদ্দিন এর হাত ও পা ভাঙ্গা,অপর দুজনের হাত ভাঙ্গা অবস্থায় ভর্তি হয়। তবে ডা: ফায়জুল হক এর দেখা মিলছিলো না। হাসপাতালেও ঠিক আসছে না। এমন অবস্থায় হতাশ হয়ে পরেন আশংকাজনক অবস্তায় থাকা পরিবারটি। নানান ধরনের গরিমশি করলে ভালো চিকিৎসার আশা আর দালালের কথায় শহরের দুটি ডায়াগনস্টি্কে গিয়ে প্রাইভেট ভাবে ডা: ফায়জুল হককে দেখান এবং বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করান। তখন তিনি শহরের অপর একটি ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে প্রায় একলাখ টাকা জমা দেয়ার কথা বলেন। এম অবস্থায় অসহায় হয়ে পরে হাত-পা ভাঙ্গা রোগীরা। ডাক্তারের কাছে তারা আকুতি মিনতি করেন,টাকা কমানোর জন্য। কোন কথা না শুনে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ডাক্তার ফায়জুল হক বৃহস্পতিবার ১৭ নভেম্বর সকালে হাসপাতালে গিয়েই রোগীদের নাম কেটে দিয়ে বলেন,চিকিৎসার দরকার নেই,বাড়ি গিয়ে ঘুমান। এমন আচনে আশপাশের অন্যরা রোগীদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়।
অজ্ঞান থাকায় আশংকাজনক হাত-পা ভাঙ্গা রোগী সামসুদ্দিন এর বক্তব্য নেয়া সম্ভব না হলেও তার স্ত্রী রেশমা বেগম বলেন,আমরা গরীব বলে চিকিৎসা পাচ্ছি না। ডাক্তারের কাছে অনেক অনুরোধ করেছি চিকিৎসা দেয়ার জন্য। তার কাছে শহরের দুটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিকে গিয়ে প্রাইবেট ভাবে দেখিযেছি এবং টেস্ট করিয়েছি। তার পরেও ভালো ব্যবহার করলো না। এক লাখ টাকা দিয়ে তার কথা মত শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি না করানোয় ফাইল ছুড়ে মেরেছে এবং হাসপাতালে এসেই আমাদের তিনজনের নাম কেটে দিয়েছে। একই কথা বলেন,তার মেয়ে সাথি এবং অন্যসব স্বজনরা।
এছাড়া হাসপাতারের অন্য রোগীরা বলেন,ডাক্তাররা হাসপাতালে আসেইনা। নার্সরা ভালো ব্যবহার করে না। তারা রুমে বসে মোবাইল টিপে ডাকতে গেলে খারাপ ব্যবহার করে। ডাক্তার ফায়জুল হক আমাদের দেখতে আসেই না।
এদিকে এমন খবরে হাসপাতালে ছুটে যান ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন ছোটন। তিনি গিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে সুষ্ঠ বিচাঁর দাবী করেন। একই সাথে হাসপাতালের ডাক্তারদের এসব বিষয় ক্ষুব্ধ হয়ে ডাক্তারের রুমে গিয়ে এমন আচরন এবং নাম কেটে দেয়ার বিসয জানতে চান এবং প্রতিবাদ জানান। এসময় সাংবাদিকদের বলেন,হাসপাতালের এই দুর অবস্থার কোন পরিবতৃন কি হবে না। সেবার মান কি উন্নতি কি হবে না।
তবে ডা: ফায়জুল হক এসব বিষয় বলেন.আমি ফাইল ছুড়ে মারিনি। সকালে নাম কেটে দিয়েছি তাদের উন্নত চিকিৎসায় ঢাকায় যাবার জন্য। রোগীরা যেতে চেয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন,যে হেতু ভোলা সদর হাসপাতালে এধরনের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই,তাই আগেই নাম কেটে দিয়েছি। প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি এবং একলাখ টাকার বিষয় বলেন,প্রাইভেট ভাবে দেখিয়েছে এবং চিকিৎসা করাতে চেয়েছে তাই বলেছি যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেই,প্রাইভেট ভাবে চিকিৎসা আছে।
অপরদিকে ভোলা সদর ২৫০ সয্যা হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা: মোহাম্মদ লোকমান হাকিম এর রুমে দুটোর আগেই তালাবদ্দ অবস্থায় দেখা যায়। পরে সহকারী পরিচালক ডা: মু: মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন,আমি বিষয়টি শুনেছি এবং ডা: ফায়জুল হক এর কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি বলেছেন,রোগীরা যেতে চাওয়ায় নাম কেটে দিয়েছে। তবে ফাইল ছুড়েমারার ঘটনা অস্বিকার করেছে। তা ছাড়া আমার উপরেও সিনিয়র আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।