হারুনুর রশিদ ভোলা নিউজ ২৪ ডট কম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণাকে গুরুত্ব দিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুশীল সমাজের প্রত্যাশা” শীর্ষক একটি অনলাইন আলোচনা সভা আয়োজন করে।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব লোকমান হোসেন মিয়া, সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্নয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব জনাব হোসেন আলী খন্দকার এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এর সাবেক চেয়ারম্যান এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডরপ এর চেয়ারম্যান জনাব মো: আজহার আলী তালুকদার, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা, স্বাগত বক্তব্য প্রদান এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে প্রস্তাবসমূহ উপস্থাপন করেন, ডরপ এর পরিচালক যোবায়ের হাসান।
ডরপ কর্তৃক উত্থাপিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার ৬টি প্রস্তাব যেমন- সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা কৌটায় নূন্যতম পরিমাণ ও কৌটার আকার নির্ধারণসহ মোড়কীকরণে কঠোর নিয়ম আরোপ ও প্লেইন প্যাকেজিং প্রবর্তন করা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, “ধূমপানের পক্ষে ইতিবাচক কিছু বলার নেই। উপস্থাপিত ৬টি সংশোধনী প্রস্তাব খুবই সময়োপযোগী এবং আমরা এই প্রস্তাবের সাথে একমত। জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া আমরা হাতে নিয়েছি। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা সফল হবো ইনশা আল্লাহ।”
জনাব হোসেন আলী খন্দকার বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুবই আন্তরিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আমাদের শক্তির জায়গা। আলোচনা সভায় যুব সমাজের সদস্য, মা সংসদের সদস্য, বিড়ি শ্রমিক এবং সুশীল সমাজের সদস্যরা খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধসহ আরো যে ৫টি দাবির কথা বলেছেন তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই দাবিগুলো আইনে পরিণত করাই আমাদের দায়িত্ব এবং এ দায়িত্বই আমরা পালন করছি।”
জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যমান আইনের বেশ কিছু ফাঁক-ফোকরের কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন বড় বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অশেষ ধন্যবাদ যে তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এবং সাধারণ অধূমপায়ী জনগণের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর জন্য বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।”
উল্লেখ্য, উক্ত অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের সদস্য, বিড়ি শ্রমিক, ডরপ মা সংসদের সদস্য এবং যুব ফোরামের সদস্যবৃন্দ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬টি সংশোধনী প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নেন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আইন শক্তিশালী করার বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান।