চরফ্যাশনে ডেঙ্গু আতঙ্ক! সরঞ্জাম না থাকায় চিকিৎসা পাচ্ছেনা রোগিরা

চরফ্যাশনে ডেঙ্গু আতঙ্ক! সরঞ্জাম না থাকায় চিকিৎসা পাচ্ছেনা রোগিরা

0
575

সোহেব চৌধুরী চরফ্যাশন : চরফ্যাশন উপজেলার জনসাধারণ এখন ডেঙ্গু আতঙ্কে দিনযাপন করছে। সাধারণ জ্বরেই ডেঙ্গুর আতঙ্ক, দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ছে দক্ষিনাঞ্চলের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষেরা। ইতিমধ্যে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অনেকেই। চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু জ্বর সনাক্তকরণের ডিভাইস না থাকায় রোগীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল বা ঢাকায় যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ৩১ জুলাই বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিটি হার্ট হাসপাতাল ও চরফ্যাশন ডায়গনস্টিকে সরেজমিনে ঘুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৯ জন রোগীর তথ্য পাওয়া যায়। এরা হলেন, হাজারিগঞ্জ ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের ফারুক পাটওয়ারির ছেলে তামজিদ হোসেন (১৫) নুরাবাদ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মোঃ হান্নান (১৮) আমিনাবাদ ইউনিয়নের মোঃ মহিউদ্দিন (৩০) মোঃ রহিম, লালমোহন গজারিয়ার মোঃ বাঁধন (১১) এদের ৫জনের নাম জানা গেলেও প্রাইভেট চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নাম জানা যায়নি। তামজিদ হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলেও বাকি সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও বরিশালে চলে যান। জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার হাসান মাহমুদ বলেন, চরফ্যাশনে এখনো ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম তবে সারা বাংলাদেশে যেভাবে ডেঙ্গুতে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সে হিসেবে আমরা কেউই নিরাপদ না। এ অঞ্চলে ডেঙ্গুর ভাইরাস ছড়ায়নি তবে যারা আসছেন তারা ঢাকা থেকে এ ভাইরাস শরিরে বহন করে নিয়ে আসছেন। চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আমার কাছে ৫-৬ দিন আগে আমিনাবাদ ইউনিয়ন থেকে মহিউদ্দিন ও অন্য কোথাও থেকে রহিম নামের ২জন রোগী এসেছিলেন তাদের চোখ লালচে ও নাক দিয়ে একজনের রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল তাদের টেস্ট দিলে ডেঙ্গুর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তারা অবস্য ঢাকা থেকেই এ ভাইরাস নিয়ে এসেছিল আমি পুনরায় তাদের ঢাকা বা বরিশালে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেই। চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিষেজ্ঞ ডাক্তার সুব্রত রায় বলেন, আমার কাছে গজারিয়া থেকে বাঁধন (১১) সহ আরোও দুইটি বাচ্চা জ্বর নিয়ে আসলে আমি তাদের বিভিন্ন টেস্ট দেই ,চরফ্যাশন আধুনিক হাসপাতাল থেকে টেস্ট রিপোর্টে তাদের ডেঙ্গু ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায় তবে আমি তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এদিকে সিটি হার্ট হাসপাতালে গতকাল নুরাবাদ ইউনিয়ন থেকে আসা মোঃ হান্নান ৩দিনের জ্বর নিয়ে আসলে তার বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা করলে ডেঙ্গুর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এবিষয়ে সিটি হার্ট হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার এইচ এম নাহিদ বলেন, তার রক্তে সাধারণত এক থেকে দেড় লাখ প্লাটিলেট থাকা প্রয়োজন কিন্তু তার রক্তে ৯৬ হাজার প্লাটিলেট থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এদিকে ডেঙ্গু পরিক্ষার জন্য সরকার কর্তৃক ফি ৫০০ টাকা নির্ধারন করে দিলেও তোয়াক্কা করছেনা চরফ্যাশন শরিফ পাড়া রোডে অবস্থিত প্রাইভেট ক্লিনিকগুলো ৮০০-১২০০ টাকা পরিক্ষা ফি নেওয়ার অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনরা। এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মকর্তা ডাক্তার শিরাজ উদ্দিন বলেন, চরফ্যাশন হাসপাতালে ডেঙ্গু ভাইরাস সনাক্তকরণের কোনো ডিভাইস নেই কিছুদিনের মধ্যেই ডেঙ্গু সনাক্তকরণের ডিভাইস চলে আসবে। তিনি আরোও বলেন, ডেঙ্গুর লক্ষণ হলো সাধারণ জরের ভিতরে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া, শরিরে রেশ হলে, ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়া, স্বাস কষ্টকাশি দেখা দেওয়া, হটাৎ অচেতন হওয়া ও রক্তক্ষরণ হওয়া এসব সিমটম দেখা দিলে দ্রুত তাকে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। এবং এডিশ মশা যেন ভাইরাস ছড়াতে না পারে এজন্য বাড়ির আসপাশে জমে থাকা পানি ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কার রাখতে হবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY