ভোলা নিউজ২৪ডটনেট। । নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট-চার্চের একটি মসজিদে গোলাগুলির খবর গেছে বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে। পুলিশ একে “সংকটময় ঘটনা” উল্লেখ করে সতর্ক করেছে।
ভবনের ভেতরে বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন।
পুলিশ লোকজনকে ওই এলাকার দিকে না যেতে সতর্ক করেছে। আল নুর নামের ওই মসজিদটি ডিন এভিনিউতে অবস্থিত এবং হেগলি পার্কের মুখোমুখি।
ক্রাইস্টচার্চের অন্তত দু’টি মসজিদে এখন পর্যন্ত গোলাগুলির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কতজন নিহত বা আহত হয়েছে সেসম্পর্কে এখনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় পুলিশ একজন নারী ও তিনজন পুরুষকে আটক করেছে।
তবে এখনও সেখানকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন বলেছেন, “হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব না হলেও আমি এটা বলতে পারি যে এটি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের কলঙ্কময় দিনগুলোর একটি।”
এই হেগলি পার্কেই অনুশীলন করছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সেখানেই বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড দলের টেস্ট খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
তবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের টুইটার পেইজে দেয়া এক পোস্টে জানানো হয় দুই দলের সম্মতিতে ১৬ই মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টটি বাতিল করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ দলে ক্রিকেটাররাও লিখেছেন এই হামলার ঘটনার পর।
সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, “ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলার সময় আল্লাহ আজ আমাদের রক্ষা করেছেন…আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান।”
তামিম ইকবাল ফেসবুকে লিখেছেন “পুরো দল বন্দুকধারীদের হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে!!! ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো, এবং সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলেছেন, বাসে করে দলের বেশিরভাগ সদস্যই মসজিদে গিয়েছিল এবং ঠিক যখন হামলার ঘটনাটি ঘটে তারা মসজিদের ভেতর প্রবেশ করতে যাচ্ছিল।
ক্রাইস্ট-চার্চের সব স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ।
ঘটনার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের খবর সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সাংবাদিক মোহাম্মদ ইসাম টুইটারে লিখেছেন, ” তারা (ক্রিকেট দল) হেগলি পার্কের কাছে একটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা থেকে বাঁচতে পেরেছেন।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা একজন বন্দুকধারীর হাত থেকে নিজেদের জীবন বাঁচার জন্য প্রাণভয়ে দৌড়াচ্ছিলেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
মোহন ইব্রাহীম নামে একজন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে বলেছেন, “শুরুতে আমরা ভেবেছিলাম এটা হয়তো বৈদ্যুতিক শকের কোনও ব্যাপার, কিন্তু একটু পরেই সবাই দৌড়াতে শুরু করলো”।
“এখনো ভেতরে আমার বন্ধুরা রয়েছে” জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার বন্ধুদের ডাকতে থাকি কিন্তু সেখানে অনেকেই আছে, কারও কথা শুনতে পারিনি। আমার বন্ধু বেঁচে আছে কি-না সেটা নিয়ে আমি আমি ভীত।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা হতাহতদের দেহ দেখেছেন বলে দাবি করলেও পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কোন খবর নিশ্চিত করা হয়নি এখনো।
আরও একটি মসজিদ থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ক্যাথেড্রাল স্কয়ারে হাজার খানেক শিশুর জলবায় পরিবর্তন মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়ার দাবিতে শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল, সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেছেন, “ক্রাইস্ট-চার্চে একজন বন্দুকধারীর হামলার কারণে গুরুতর এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির রূপ নিয়েছে”।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ তার সর্বশক্তি নেয় কাজ করছে, কিন্তু এখনো এখানে অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি বেরুতে এবং রাস্তায় নামতে নিষেধ করা হয়েছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত স্কুলও বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।