ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট :মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের দ্বিতীয় আসর নিয়েও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। এবার মুকুট মাথায় উঠেছে পিরোজপুরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে জাঁকজমক আয়োজনে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮ এর গ্র্যান্ড ফিনাল আসরের পর্দা নামার পর এবারও নানা বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ফাইনাল রাউন্ডে বিচারকদের প্রশ্ন করা, প্রতিযোগীদের হাস্যকর উত্তরসহ নানা বিষয়ে বিতর্ক ট্রল হচ্ছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে।
ঐশীর চেয়ে এবারের আসরে আলোচনায় এগিয়ে ছিলেন দুইজন। তারা হচ্ছেন লাবণী ও অনন্যা। এর মধ্যে আফরিন সুলতানা লাবণী আলোচনায় চলে আসেন তাকে বিচারকের করা প্রশ্নের হাস্যকার উত্তর দিয়ে।
এবার এই লাবণীকে নিয়ে বেরিয়ে এলো আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। মিস ওয়ার্ল্ডে অংশ নেয়া এই লাবণী বিবাহিত! জামালপুর তার স্বামীর নাম আতাউর রহমান আতিক। জামালপুর সদর বাগেরহাটা কলেজ রোডের বাসিন্দা। ব্যবসার পাশাপাশি কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতেও মডেল হয়েছেন তিনি। জামালপুর কোর্টে গিয়ে ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট বিয়ে করেছিলেন তারা। দুই বছর সংসার করার পর ২০১৬ সালের ১৭ মে ডিভোর্স হয় তাদের। ডিভোর্সের পর লাবণীর নামে দুটি চুরির মামলাও হয়। মামলাগুলো এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে লাবণীর সাবেক স্বামী সময় সংবাদকে বলেন, ‘২০১২ সালের শেষের দিকে আমাদের চেনা জানা শুরু হয়। এরপর প্রেম। তখন আমি ঢাকাতেই থাকতাম। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু সে ভালোবাসার মর্যাদা দেয়নি। ওর মায়ের চিকিৎসা আর ওর পিছনে অনেক টাকা ব্যয় করেছি। চকবাজারে সামসুল হক টাওয়ারে ওর নামে (আফরিন এস এল এন্টারপ্রাইজ) আমার দুটি দোকান ছিল; যা এখন নেই। সে আমার অনেক টাকা নিয়ে ভেগে যায়। ওর নামে চুরির মামলাও করেছি। মামলার এখন চার্জশিট হচ্ছে। এখন সে ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। ক্ষমতাবলে ২০১৬ সালের মামলা ২০১৮ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।’
মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা দশে উঠে এসেছিলেন আফরিন লাবনী। অথচ এ প্রতিযোগিতায় বিয়ে ও ডিভোর্সের তথ্য গোপন করেছেন তিনি। লাবণীর এ প্রতিযোগিতায় আসার কথাটি জানার পর প্রতিযোগিতাটির আয়োজক প্রতিষ্ঠানের মালিক স্বপন চৌধুরীকে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন বলে জানান আতাউর। কিন্তু আয়োজক জানিয়েছিলেন লাবণী তো আর মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হয়নি। তাই আর কোনো পদক্ষেপ নেননি তারা
অথচ প্রতিযোগিতাটির শুরুতে এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান অন্তর শোবিজের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী জানিয়েছিলেন, এবার যদি কোনো প্রতিযোগী মিথ্যা তথ্য দেন কিংবা তথ্য গোপন করেন, পরে তা প্রমাণিত হলে সেই প্রতিযোগীকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। গত বছর মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে বিভ্রান্তি হয়েছিল। এবার কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা নিজস্ব লোকজন এবং সংস্থার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করছি।
বিষয়টি নিয়ে স্বপন চৌধুরীর সঙ্গে সময় সংবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু সঠিক তথ্য আমার জানা নেই। তবে আমরা সেরা ৫ নিয়ে যাচাই বাছাই করেছি। কিন্তু লাবনী নামের মেয়েটি যেহেতু সেরা ৫-এ ছিলেন না তাই বিষয়টি আসলে আমাদের আওতায় আসে না।’
এ বিষয়ে লাবনীর মন্তব্য জানতে বাবা বার তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি। তবে এর আগে সময় নিউজের তারকা বহুল অনুষ্ঠান ‘সঙ্গে তারকা’র উপস্থাপক সাব্বির সামি মুহিতের করা প্রশ্ন আপনাদের কেউ আবার বিবাহিত নন তো এমন এক প্রশ্নের জবাবে লাবনী বলেন প্রশ্নই আসে না বিয়ের। আর আমার কোন বয়ফ্রেন্ডও নেই। আমি দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই। আমি এগুলো নিয়ে এখন চিন্তা করতে চাই না।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে শুরু হয় মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা। এ প্লাটফর্ম থেকে উঠে আসা সেরা সুন্দরী মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রথম বছরেই বিবাহিত এভ্রিলের মাথায় মুকুট উঠায় বিতর্কের মুখে পড়ে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ। প্রায় ২৫ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিচারকদের চূড়ান্ত রায়ে মুকুট জয় করেন এভ্রিলকে। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে মিথ্যা তথ্য দেয়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে প্রতিযোগিতাটির আয়োজক প্রতিষ্ঠান অন্তর শোবিজ। পরে এভ্রিলকে বাদ দিয়ে জেসিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা দেয়া হয়।