মো: আফজাল হোসেন ॥ ভোলায় সরকারী গুদামের চাউল বোঝাই একটি ট্রাকসহ ট্রাকের চালককে আটক করেছে জেলা প্রশাসন। আজ ৮ মার্চ শুক্রবার দুপুরের পর পরই চাউল বোঝাই ট্রাকটি আটক করা হয় ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাট থেকে। তবে চাউল ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য চলছে জোর লবিং আর তদবির।
অভিযোগে জানাযায়,দৌলতখান উপজেলার মদনপুর গুচ্ছ গ্রামের ২০মেঃ টন চালসহ ট্রাক আটক করেছে ভোলার প্রশাসন। ভোলার ভেদুরিয়া ফেরীঘাট থেকে এ চাল জব্দ করেছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে পুলিশ। দৌলতখান মদনপুর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামের ৬৮.৭৪০ মেঃ টন চাল গত ৩১ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখে অনুমোদন করেন দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ মজুমদার।
দৌলতখান খাদ্য অধিদপ্তরের বিলি আদেশ (ডিও) এর চালানের মাধ্যমে জানাযায়, ওই গুচ্ছ গ্রামের সিপিসি (ক্রেতা) চর মুন্সি কোয়েল ডি-১ গুচ্ছগ্রাম মদনপুরের ইউপি মেম্বার বেনু আমিনের নামে চাল গুলো ইস্যু করা হয়। দৌলতখান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কান্তি রঞ্জন দাস গুচ্ছ গ্রামের কাজ পরিচালনার জন্য এ চালগুলে ৩১/১/২০১৯ তারিখে বিতরণ দেখান। কিন্তু চাল গুলো ওই তারিখে বিতরণ না করে অবৈধ ভাবে ঐ চাউল সরকারী গুদামে রেখে দেন,ব্যবসায়ীরা। পওে সুযোগ বুঝে ৮মার্চ শুক্রবার ৩টি ট্রাকে ভর্তি করে সাতক্ষীরার ত্রিশ মাইলের রাকিব অটো রাইস মিলের নামে পাচার করা হচ্ছিল। চাল গুলো ভোলার ভেদুরিয়া ফেরীঘাট হয়ে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ট্রাকে করে যাচ্ছিল। জব্দকৃত ট্রাক নং-কুষ্টিয়া-ট-১১-১৯৭২।
এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলার জেলা প্রশাসক একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর মাধ্যমে পাচারকৃত চাল গুলো জব্দ করে ভোলা থানায় নিয়ে আসলেও অপর ২টি চালভর্তি ট্রাক ফেরী পার হয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এসব বিষয় জানতে চাওয়া হলে ভোলা সদর এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কাওছার হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গরীবের ভিজিডি চাল পাচারের খবরে ভোলার ভেদুরিয়া ঘাটে অভিযান পরিচালনা করি। তবে তা শোনা যায় তা গুচ্ছ গ্রামের চাল। এসময় একজন ড্রাইভার আটক করা হয়েছে। এখন যাচাই বাচাই চলছে তা বাহিরে বিক্রি করার অনুমতি আছে কিনা।
সূত্রে জানাগেছে,উক্ত চাল গুলো ভোলার খালপারের কলোবাজারী চাল ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর মিয়ার ক্রয়কৃত চাল। সরকারের বিধান অনুযায়ী প্রতি জেলার চাল স্ব-স্ব এলাকায় বিতরণের কথা থাকলেও এ কু-চক্রি মহল দীর্ঘ দিন যাবৎ আবাসনের চাল কম দরে ক্রয় করে ভোলার বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছে। শুধু তাই নয়,তারা সরকারী চাউল এসব রাইস মলিে দিয়েও ঐ চাউল ঘুওে আবার সরকারী গুদামে আসছে। আর এভাবেই এবছর চাউল সংগ্রহ হয়েছে বলে ভোলার খালপাড় এর অনেক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে জানান। আবাসন ও জেলে পুর্নবাসন এর চাউলসহ অসহায় দ্রুস্থ্যদের জন্য সরকার এর দেয়া চাউল এভাবেই জেলার বাহিরে চলে যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। যা প্রশানের কাছে ধরা পড়লেই ভুয়া কাগজপত্র দেখানো হয়। এই ব্যবসার সাথে অনেকেই জড়িত থাকে বলেই সহসা ধরা পড়ছে না।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ওই চাল ব্যবসায়ী আলমগীর মিয়ার এর আগে দৌলতখানের আবাসনের তিন ট্রাক চাল পাচারকালে পুলিশ হাতেনাতে আটক করে ভোলা থানায় সোপর্দ করে। পরে আলমগীর মিয়া ভবিষ্যতে ভোলার বাহিরে চাল পাচার না করার মুচলেকা দিয়ে সে চাল গুলো দৌলতখান খাদ্য গুদামে ফেরৎ পাঠানোর কথা বলে তা পুনরায় জেলার বাহিরেই পাঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ঐ সময় প্রশাসনকে বিষয় জানালে তারা নিরব ভুমিকা পালন করেন। তিনিসহ অনেক চাউল ব্যবসায়ী ঐ সময় একই সাথে ভোলার জেলা প্রশাসক এর কাছে গিয়ে এই মুচলেকা দিয়ে আসেন।
এবিষয় মোঃ আলমগীর মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বিকার কওে বলেন,এসব চাউল আমার না। যাদের চাউল,তারা আসছে কাগজপত্র নিয়ে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
এ ব্যাপারে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ মজুমদার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, আবাসনের কাজের জন্য চাল দেয়া হলেও চাল গুলো তারা বিতরণ না করে অন্যত্র বিক্রি করেছে। এটা স¤পূর্ণ অন্যায় কাজ।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে দৌলতখান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শান্তি রঞ্জন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ খবর পর্যন্ত জানাযায়,রাতেই চাউল ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য একটি চক্র চেস্টা চালাচ্ছে।