আদিল হোসেন তপু ॥ ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার দক্ষিণে সমুদ্র মোহনায় জেগে থাকা বিছিন্ন ঢালচর ইউনিয়ন। যেখানে প্রতিনিয়ত জলবায়ুর পরিবর্তন আর মেঘনার করাল গ্রাসে সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিবছর উদ্বাস্তু হচ্ছেন নদীপারের হাজার হাজার মানুষ।ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন ঢালচর। এখনকার মানুষ সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা থেকেই যেন বঞ্চিত। বিছিন্নতার কারনে এখানে শিশুরাও ভালো নেই। দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখনকার অভিভাবকরা নিরাপত্তা হীনতার কারনে শিশুদের অল্প বয়সে বাল্যবিবাহ,শিশু শ্রম,শিশু নিয়োজিত, নিযার্তন এর স্বীকার,স্কুল থেকে ঝড়ে পড়া,নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। তাই শিশুদের ভবিষ্যৎ কথা চিন্তা করে দুর্গম ঢালচরের দুভোর্গের কথা শুনতে গেলেন জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ একটি প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার (৩ মার্চ) প্রতিনিধি দলের ৬ সদস্য টিমের সদস্যরা প্রথমে ঢালচর এর আনন্দ বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন। পরে পশ্চিম ঢালচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,প্রাথমিক বিদ্যালয়,স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবিন্দর সাথে কমিউনিটি ডায়লগ,জবা কিশোরী ক্লাবের কিশোরী ক্লাব পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি ইউনিসেফ এর সহযোগিতায় কোস্ট ট্রাস্ট এর সমন্বিত শিশু বিবাহ রোধ কর্মসূচি (আইইসিএম) এর বিভিন্ন প্রকল্পের বিভিন্ন বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন তারা। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইউনিসেফের বাংলাদেশে এর ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ ভীরা মেনডনকা,ইউনিসেফ এর জেন্ডার এন্ড ডেভলপমেন্ট স্পেশিয়ালিস্ট নওরিন খান, ইনোভেসন স্পেশিয়ালিস্ট মিকু ওয়াটানাবি,সিফরডি স্পেশালিস্ট তানিয়া সুলতানা,ওয়াস স্পেশিয়ালিস্ট চার্সটিন ক্লাথ,ডোনার রিলেশন স্পেশিয়ালিস্ট এলাকা কোর্টস গিল। এছাড়াও সঙ্গে ছিলেন ইউনিসেফ বরিশাল বিভাগীয় প্রধান এএইচ তৌফিক আহমেদ, ইউনিসেফেরর সিফরডি অফিসার সনজিত কুমার দাস, ইউনিসেফ প্লানিং এন্ড মনিটরিং অফিসার আল-মমিন,শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা মো: জামিল হোসেন, কোস্ট ট্রাস্ট এর সহকারী নির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক,এডুকেশন অফিসার রুবাইয়া মঞ্জুর প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এলজিসি প্রকল্পের ডিস্ট্রিক কো-অর্ডিনেটর আব্দুস সালাম,কোস্টট্রাস্টের আইইসিএম প্রকল্প সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান, সহকারি প্রকল্প সমন্বয়কারী দেবাশীষ মজুমদার প্রমুখ।
এর আগে প্রতিনিধি দল কোস্ট ট্রাস্ট এর ‘‘রেডিও মেঘনা” নারী সাংবাদিক ও চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এছাড়াও চরফ্যাশন উপজেলার চর শশী ভূষন এ মালেক মহিলা দাখিল মাদরাসা ওয়াশ ব্লক ভিজিট ও কিশোরীদের সাথে কথা বলেন।
শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা মো: জামিল হোসেন জানায়,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, বাংলাদেশের মধ্যে ভোলায় বাল্য বিয়ের হার শতকরা ৬০ ভাগের বেশি । যে সব কারনে ভোলায় বাল্য বিয়ের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব বিশষ গুলো সরোজমিনে প্রত্যক্ষ করেন ইউনিসফ প্রতিনিধি দল। এসময় তারা দারিদ্য্রতা,অসচেতনতা,জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে নদী ভাঙ্গন রোধে কিশোরীদের নিয়ে নিরাত্তা হীনতাকেই মূল সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। পাশাপাশি বাল্য বিয়ে রোধে মানুষকে সচেতনতা বাড়াতে কমিউনিটি ডায়লগ,কিশোর-কিশোরী ক্লাব এর কার্যক্রম,স্কুলে ওয়াশ জোন পরিদর্শন করার জন্য ঢালচর ও চরফ্যাশন ভিজিটকরেন ইউনিসেফ এর প্রতিনিধি দল।