আদিল হোসেন তপু,ভোলা নিউজ ২৪ডটনেট।। ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ভোলার ইট ভাটা গুলোতে অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। টানা বর্ষণ ও ঝড়ে ইট ভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাচা ইট এখন মাটির স্তুপে পরিনত হয়েছে। কয় দিন আগেও এ ইট ভাটা গুলোতে সারি সারি কাচা ইট সাজানো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সকল ইট ভিজে মাটির স্তুপে পরিনত হয়েছে। এতে করে ইট পোড়ানোর আগেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ইট ব্যবসায়ীদের। ফলে এ ইট ভাটা গুলোর নতুন ইট উৎপাদন দু’মাস পিছিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এ ক্ষতির প্রভাব পড়বে ইটের দামের উপর। জানা যায়, ভোলার সাতটি উপজেলায় ১২০টি ইট ভাটা রয়েছে। সকল ইট ভাটায় চলছিলো নতুন ইট তৈরীর কাজ। এগুলো চলতি মাসের শেষের দিকে পোড়ানো শুরু করার কথা ছিলো। মৌসুমের শুরুতেই ঘর্ণিঝড় হওয়ায় পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত রাখা সকল কাঁচা ইট বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
বুধবার ভোলার বিভিন্ন ইটভাটা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইটভাটা গুলোতে শ্রমিকরা ভিজে মাটিতে পরিনত হওয়া স্তুপ গুলো সরানোর কাজ করছে। কোনো কোনো ইট ভাটায় এখনও শ্রমকিরা কাজ শুরু করেনি। পোড়ানোর জন্য সারি সারি সাজিয়ে রাখা কাঁচা ইটগুলো বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিনত হয়েছে। কিছু ইট পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত বুলবুল’র প্রভাব থেকে শেষ রক্ষা হয়নি।
মায়ের দোয়া ও সাবাব ব্রিকস এর মালিক আমির হোসেন জানান, ঝড়ে তার দুইটি ফিল্ডের ১৩ লক্ষ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে।
ইলিশা ব্রিকস এর মালিক মাকসুদুর রহমান জানান, ঝড়ের আঘাতে তার ফিল্ডের প্রায় ১০ লাখ কাচা ইট মাটিতে পরিনত হয়েছে। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে।
ভোলা সদর উপজেলার রূপালী ব্রিকস ও সুরামা ব্রিকস এর মালিক মো. নুরুল ইসলাম মিয়া বলেন, তার দুইটি ইট ভাটায় ক্ষয়-ক্ষতি ব্যাপক। তার দুইটি ইট ভাটায় ১৩ থেকে ১৪ লাখ কাঁচা ইট মাটির সাথে মিশে গেছে।
জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একতা ও ফ্রেন্ড ব্রিকস এর মালিক তরিকুল ইসলাম কায়েদ জানান, ঘুণিঝড়ে ভোলার প্রায় ১২৫টি ইট ভাটার সব গুলোই কমবেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। যার আর্থিক পরিমান কয়েক কোটি টাকা। তার নিজের দুটি ফিল্ডে প্রায় ১০ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য চলতি অর্থ বছরে ইটভাটা মালিকদের আয়কর মওকুফের দাবী করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, সরকার যদি এ সকল ইট ভাটার মালিকদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেয়া ও পূর্বের ঋণের সুদ মওকুফ না করে তাহলে তারা পথে বসে যাবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ইট ভাটার মালিকরা যদি তাদের ক্ষতি নিরুপন করে আমাদের কাছে আবেদন করে। তাহলে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবো। যাতে করে তারা সহজ শর্তে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণসহ আর্থিক সহায়তা পেতে পারে।