ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন হয়। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে এসে তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে বাধা উপেক্ষা করেই প্রায় এক ঘণ্টা মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন অভিযোগ জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির স্কুলবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক ইয়াদ আলী রিয়াদ, কৃষি সম্পাদক বরকত হাওলাদার, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, সূর্য সেন হলের সভাপতি গোলাম সরোয়ার, বঙ্গবন্ধু হলের সম্পাদক আল আমিন রহমান, বিজয় একাত্তর হলের সভাপতি ফকির আহমেদ রাসেল প্রমুখ নেতাকর্মী মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিল নুরুল হক নুর। সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা করেছে। নুরকে এমনকি হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দেয়। হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করেন তাঁরা।
ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাসনীম মাহবুব বলেন, ‘কতিপয় ছাত্র (ছাত্রলীগ) আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। তারা আমাদের বিভিন্ন দলের ট্যাগ দেয়। আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তারা আমাদের বিভিন্ন কটূক্তি, ধমক দেয়। তারা আমাদের ছবি তোলে।’
এই শিক্ষক আরো অভিযোগ করেন, ‘মানববন্ধনে উপস্থিতদের মধ্যে যারা হলে থাকে, তাদেরও ছাত্রলীগ দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই।’ তিনি ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান।
গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলনে বাধা দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে ১০ জনের মতো আহত হন। আহতরা অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এর পরই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ অধিকার ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বাধা ও হামলার প্রতিবাদে রোববার থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের মানববন্ধনের কর্মসূচি চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস থাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি পালিত হয়নি।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনের জন্য দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ফের হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে।
তবে ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগের নেতারা গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তাঁরা কোনো হামলা বা মারধর করেননি। ছাত্রলীগ দেশের আইন মেনে চলে। তাঁরা আইন নিজের হাতে তুলে নেন না।