রোজ সকালে একটি করে পিল। তা হলেই আর খদ্দেরের ইচ্ছানুযায়ী কনডোম ব্যবহার না করলেন এইচআইভি সংক্রমন থেকে বেঁচে যাবেন যৌনকর্মীরা। আর সে জন্যই ভারতের পশ্চিম বঙ্গের যৌনপল্লীগুলোতে ওই পিল বিতরণ শুরু করেছে রাজ্যের যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি।
তবে, এখনো পর্যন্ত রাজ্যের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লী সোনাগাছিসহ সব যৌনপল্লির ৯৫ শতাংশ যৌনকর্মী কনডোম ব্যবহার করছেন। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা, ডাক্তার স্মরজিৎ জানা বলেন, ‘১৯৯২-তে কনডোম ব্যবহারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। তখন মাত্র তিন শতাংশ যৌনকর্মী কনডোম ব্যবহার করতেন। এখন সব যৌনপল্লি মিলিয়ে গড়ে ৯৫ শতাংশ যৌনকর্মী কন্ডোম ব্যবহার করছেন।’
কিন্তু, সব যৌনকর্মী কনডোম ব্যবহার করবেন, এমন সম্ভবনা নেই বলেই মনে করছে দুর্বার কমিটি। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, অনেক সময় খদ্দেররা কনডোম ব্যবহার করতে রাজি হন না। ফলে বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিতে হয় রাতের ওই পরীদের।
এছাড়াও, বয়স্ক যৌনকর্মীরাও অনেক সময় কনডোম ব্যবহার করতে পারেন না। অন্যদিকে, ফিমেল কনডোমের দামও বেশি।
এ বিষয়ে ডাক্তার স্মরজিৎ জানা বলেন, ‘দাম বেশি হওয়ার কারণে ফিমেল কনডোমের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হয়নি।’ বিশেষজ্ঞরাও এমন বলেন যে, ফিমেল কনডোম ব্যবহারের মাধ্যমেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। আর, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্য জুড়ে এ বার পিল ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি।
ডাক্তার স্মরজিৎ জানা বলেন, ‘২০১৬-র জানুয়ারি থেকে সোনাগাছিতে এই পিলের ব্যবহার শুরু হয়েছে। দুর্বারের অধীনে থাকা রাজ্যের ৫০টি যৌনপল্লিতে এ বার এই পিলের ব্যবহার শুরু হচ্ছে। এই পিল ব্যবহারের মাধ্যমে যৌনকর্মীরা এ বার এইডস্ প্রতিরোধের কাজও করবে।’
এই পিল অর্থাৎ, Pre-Exposure Prophylaxis (PrEP)-এর মাধ্যমে কীভাবে এডস প্রতিরোধের কাজে এগিয়ে যেতে পারবেন যৌনকর্মীরা? দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘রোজ সকালে একটা করে এই পিল খেতে হবে। তা হলে কোনো খদ্দের কনডোম ব্যবহারে রাজি না হলেও, যৌনকর্মী অসুরক্ষিত হবে না।’
এইচআইভিতে আক্রান্ত নন অথচ সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে, এমন ক্ষেত্রে প্রতিরোধের জন্য এই পিল ব্যবহার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।