মেহেন্দিগঞ্জের আলিমাবাদে জমি দখল করে রাস্তা নির্মান বাঁধা প্রদান করায় প্রাননাশের হুমকী পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

0
158
স্টাফ রিপোর্টার॥ ভোলার সীমানা ঘেষা মেহেন্দিগঞ্জে আলিমাবাদ ইউনিয়নে মাছকাজী এলাকায় অন্যের জমি জোর পূর্বক দখল করে রাস্তা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে হানিফ সিকদারের পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে আলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ শহীদুল ইসলামেরও বিরুদ্ধে। চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় বালু ফেলে রাস্তা তৈরি করছে প্রভাবশালী হানিফ সিকদার গংরা। রাস্তা নির্মানে বাঁধা দেয়ায় জমির মালিকদেরকে প্রাণননাশের হুমকী দেয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় জমির মালিক মেহেন্দিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত কোন মিমাংসা হয়নি। তদন্তে আসা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে জনমনে। বর্তমানে সুষ্ঠ বিচারের আসায় বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ভুক্তভোগী মঞ্জুরুল হাওলাদারের পরিবার। তবে মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান জানান, উভয়পক্ষকে তাদের জমির কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। তবে বাদী পক্ষ না আসাতে ঘটনার মিমাংসা করা যাচ্ছেনা। আর অন্যায় করে যদি কেউ জমি দখল করে থাকে তাহলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
জানা যায়, আলিমাবাদ ইউনিয়নে মাছকাজী এলাকায় দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছে মঞ্জুরুল হাওলাদারের পরিবাররা। কিন্তু হঠাৎ তাদের রেকর্ডিও জমি দখল করে রাস্তা নির্মান করছে পার্শ্ববর্তী হানিফ সিকদার গংরা। তারা জমি দখল করে রাতের আধারে গাছ কেটে বালু ফেলে জমি দখল করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় বাঁধা প্রদান করতে গেলে হানিফ সিকদারের ছেলে মিরাজ শিকদার, সোহেল সিকদার, বিল্লাল, শহীদ সিকদার সহ আরো অনেক লোকজন তাদের উপরে চওড়া হয়। এই ঘটনায় বাঁধা দিতে গেলে হানিফ সিকদারের ছেলেরা মঞ্জুরুল হাওলাদারের পরিবারে নারী সদস্যদের উপর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। মঞ্জুরুল হাওলাদার পরিবারের পক্ষে জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু থানা থেকে তদন্ত আসা এসআই রবীন্দ্র সামনেই চেয়ারম্যান শহীদ তাদেরকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে পুরো বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বলেন। তা না হলে এলাকা ছাড়তে হবে বলে জানায়।
জমির মালিক মঞ্জুরুল হাওলাদার জানায়, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আমরা এই জমি ভোগ দখল করে আসছি। এখন হঠাৎ করে হানিফ সিকদার গংরা এই জমি দাবি করে আমাদের বাড়ীর উঠান, গাছ, বাথরুম দখল করে তারা রাস্তা তৈরি করছে। আমরা বাঁধা প্রদান সত্বেও তারা কোন কিছু না মেনে রাস্তার জন্য আমাদের জমির উপর বালু ফেলে রাস্তা তৈরি করছে। এই ঘটনাটি আমরা পুলিশকে জানালেও তারা তেমন কোন আমলে নেয়নি। এখন আমার পরিবার নিয়ে চরম আতংকের পাশাপাশি জমি হারানোর শংকায় আছি।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে হানিফ সিকদার বলেন, ৩ বছর আগে আমরা সেলিমাবাদ মৌজার রব মাষ্টারের কাছ থেকে ১৪ গন্টা জমি কিনছি। সেই জমি থেকে আমাদের বাড়ির রাস্তার জন্য আমরা রাস্তা তৈরি করছি। আমরা কাউকে জমি দখল করিনি। যারা অভিযোগ করছে তাদের জমির মৌজা হচ্ছে আলিমাবাদ মাছকাজী মৌজার মধ্যে। আর আমাদের জমি মৌজা হচ্ছে সেলিমাবাদের মধ্যে। কাগজ যার জমি তার। কোন বিরোধের কিছু নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে থানায় উভয়পক্ষকে পুলিশ ঢেকেছে কাগজ দেখার জন্য। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সমাজিকভাবে হেও করার চেষ্টা করছে।
আলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ শহীদ ইসলাম বলেন, আমি কারও একার চেয়ারম্যান নয়। আমি সবার চেয়ারম্যান। দুইপক্ষ তাদের জমির বিরোধের সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসছে। কাগজ যার পক্ষে জমি তার। তবে মঞ্জুরুল হাওলাদার যে জমিতে বসবাস করছে তারা খাসজমিতে বসবাস করে আসছে। এখন কাগজ থাকলে জমি পাবে। আবার কেউ যদি অন্যায় করে কারও জমি দখল করে থাকে তারও শাস্তি হবে। আমি কাউকে জমি দখল করার নির্দেশ দেইনি।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান জানান, উভয়পক্ষকে তাদের জমির কাগজ পত্র নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। তবে বাদী পক্ষ না আসাতে ঘটনার মিমাংসা করা যাচ্ছেনা। আর  অন্যায় করে যদি কেউ জমি দখল করে থাকে তাহলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা বলে জানায়। তবে যে কোন পক্ষ চাইলে আদালতের আশ্রয় নিতে পারে বলে জানায়।

LEAVE A REPLY