স্টাফ রিপোটার: ‘মায়ের কপাল জুড়ে চাঁদের টিপের মতো,ভোলা এই বাংলার মোহনীয় দ্বীপ সাগরে নদীর জলে, জীবন তরঙ্গ দোলে,ভোলা যেন বাংলার প্রাণের প্রদীপ’ এক যুগ ও বেশী সময় পুৃর্বে এভাবেই কোরাস গান পরিবেশন করে ভোলাকে উপস্থাপন করেছিল জেলার চরফ্যাশনের সাংস্কৃতিক সংগঠন সেতুবন্ধন খেলা ঘর। দ্বীপ জনপদ ভোলা এখন অবহেলিত নেই। এককালের অবহেলিত জনপথ ভোলায় লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া।
অবকাঠামো ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের ফলে আগেকার সেই ভোলা আর নেই। বিশেষ করে চরফ্যাশন উপজেলায় বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী জ্যাকবের রেকর্ডসংখক দৃশ্যমান উন্নয়নে এটি একটি মডেল উপজেলা হিসাবে রুপান্তরিত হয়েছে।
চরফ্যাসনের খাসমহল মসজিদ ও ফ্যাশন স্কায়ারের দক্ষিণ পার্শ্বে ২১৫ ফুট উঁচু টাওয়ার টি ৮০ ভাগ নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান চরফ্যাশন পৌর মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ।
জানা গেছে, ভোলা -৪ আসনের সংসদ সদস্য উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব`র উদ্যোগে প্রায় ২০ কোটি ব্যায়ে ১৮ তলা বিশিস্ট দৃষ্টিনন্দন এ টাওয়ার টি পর্যটকদের আকর্ষনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। টাওয়ার টিতে রয়েছে লিফটের সংযোজন, উচ্চক্ষমতার বাইনোকুলার যা ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার সকল কিছু দেখা যাবে অনায়াসে। সে লক্ষে ইতিমধ্যে কুকরি-মুকরিতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক বিলাসবহুল রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হচ্ছে।
এই ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়ালেই পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদীর শান্ত জলধারা, পুর্বে মেঘনা নদীর ঢেউ, দক্ষিণে চরকুকরি মুকরিসহ বঙ্গোপসাগরের ঘেঁষে বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলার বিরাট আংশ নজরে আসবে। ওয়াচ টাওয়ারটি ৭৫ ফুট মাটির নিচ থেকে ৭০ টি পাথর ঢালাই পাইলিং ফাউন্ডেশনের উপর নির্মিত সম্পুর্ন স্টিলের তৈরী।
৮ মাত্রার ভুমিকম্প সহনীয় এ টাওয়ারের চুড়ায় উঠার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি ১৬ জন ধারণ ক্ষমতার রয়েছে অত্যাধুনিক ক্যাপসুল লিফট। ১০০০ বর্গফুটের ১৭ তম তলায় রাখা হয়েছে বিনোদনের নানান ব্যবস্থা।
একসঙ্গে ২০০ পর্যটক সেখান থেকে ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত দেখতে পাবেন। এ ছাড়া ও বিশ্রাম, প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবারের ব্যাবস্থা রয়েছে। টাওয়ারটির মুল উচ্চতা ১৮৫ ফুট, উপরে রয়েছে ৩০ ফুপ দীর্ঘ সুদৃশ্য ফলক। টাওয়ারটির ডিজাইনার হচ্ছেন বিশিষ্ট স্থপতি কামরুজ্জামান লিটন।
২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে এর কাজ শুরু হয়েছে, ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা চরফ্যাসনের প্রাকৃতিক বিশাল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে, সাগর মোহনায় অপরুপ নিসর্গ উপজেলার সম্পদ কে কাজে লাগাতে পারলে শুধু বাংলাদেশেই নয় বিদেশ থেকে ও বহু পর্যটক এখানে আসবে এমন টাই জানিয়েছেন চরফ্যাসনের সাধারন মানুষ। এই টাওয়ারটিতে উঠতে টিকেটের ব্যাবস্থা থাকবে। টিকেটের দাম সর্বোচ্চ বিশ টাকা হতে পারে।
বিশ্বখ্যাত আইফেল টাওয়ারের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে এ জ্যাকব টাওয়ার। এটি চরফ্যাসন উপজেলাসহ ভোলা বাসীকে বিশ্বের দরবারে আলাদা পরিচিতি দিবে বলে আশাবাদ করেছেন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি।
চরফ্যাসন পৌর শহরের ফ্যাসন স্কয়ারের পাশে নির্মিত হচ্ছে শিশু ও বিনোদন পার্ক। এই স্থান টি এক সময় ছিল চরফ্যাসনের সবচেয়ে নোংরা এবং দুর্গন্ধময় স্থান। পৌরসভার উদ্দ্যেগে প্রায় তিন বছর আগে শুরু হয় এই শিশু ও বিনোদন পার্কের কাজ। এবং এটিই হবে ভোলা জেলার অন্যতম সুন্দর স্থান এমনটাই আশা সকলের।
এই পার্কের বেশির ভাগ খেলনাই আনা হয়েছে চীন থেকে। এখন শুধু কাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায়। ৮০ ভাগ কাজ প্রায় শেষ। এই পার্কে আছে প্রাটোফার, ট্রেন, হানিসুইং, মেরিগ্রাউন্ড, ওয়ান্টার হুইল, থ্রিডি গেইম, বেলুন ঘর, হাতি, জিরাফ সহ অনেক প্রাণি, বিভিন্ন ধরণের ফুল গাছ,বসে আড্ডা দেওয়ার জন্য আছে গোলঘর, বসার স্থান, গাছের উপরে কফি খাওয়ার ঘর, সুইমিং পুল সেখানে থাকবে অনেক ধরনের খেলনাসহ ইত্যাদি। আরো অনেক ধরনের ছোট বড় খেলনা। এই পার্কের ইঞ্জিনিয়ার এহছান তিনি প্রায় এসে দেখে যান এবং বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে যান।
সাধারণ মানুষের মতে পার্কটি উদ্বোধন হলে চরফ্যাশন আরও উন্নত হবে এবং দেশের ভিতরে চরফ্যাশন অন্যতম পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হবে।
খুব শিগগির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু ও বিনোদন পার্ক এবং জ্যাকব টাওয়ার এক সাথে উদ্বোধন করার সম্ভানা রয়েছে। এমনটাই জল্পনা কল্পনা করছেন চরফ্যাশনের লাখো মানুষ।
বঙ্গপোসাগরের খুব নিকটে অবস্থিত চরাঞ্চলের একটি চরফ্যাশন। ইতোমধ্যেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, ক্যাম্পিং করার জন্য প্রশস্ত বিচ আর নিরব শান্ত পরিবেশের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি। পাশেই আছে মনপুরা।
ঘন বন, লোকালয়ের কোলাহল থেকে দূরে, নানা বণ্যপ্রাণির অবাধ বিচরণের মাঝে প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য পেতে প্রায়ই এখনে ভ্রমণ করেন অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে বছরের এই সময়টা থেকে শুরু করে শীতের শেষ অব্দি। শান্ত নদী বেয়ে এসময় দ্বীপে যাওয়া সহজ আর সমুদ্রও থাকে চুপচাপ। তাই ভ্রমণটা হয় একেবারে পারফেক্ট।