আকতারুজ্জামান সুজন, চরফ্যাসন প্রতিনিধিঃ শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতের পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হতো সরিষার বীজ ছিটানোর কাজ। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং খরচ না পোষানোর কারণে সরিষা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। তারা এখন লাভের আশায় অন্য আবাদের দিকে ঝুঁকছে। ফলে চরফ্যাসনে দিন দিন কমে যাচ্ছে সরিষার আবাদ। অালাপকালে এরকমভাবেই বললেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ অামির হোসেন। চরফ্যাশন উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে আগে দেখা যেতো হলুদ রঙে রাঙানো সরিষা ক্ষেত। যেদিকেই চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়াতো সরিষা ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ, কিন্তু কালের বিবর্তনে দিন দিন কমে যাচ্ছে সরিষা চাষ। তবে চরফ্যাসন উপজেলার কৃষি বিভাগের তথ্য ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঠাকুর কৃষ্ণ দাস বলেছেন ভিন্ন কথা, তিনি বলেন চরফ্যাসন উপজেলায় সরিষা চাষ মোটেও কমেনি বরংচো বেড়েছে। তিনি বলেন, গত বছর চরফ্যাসনে সরিষার চাষের লক্ষমাত্রা ৩ হাজার হেক্টরের বিপরীতে অাবাদ হয়েছিলো ৩ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর সরিষার চাষের লক্ষমাত্রার ৩ হাজার ২০৫ হেক্টরের বিপরীতে অাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে, যাহা গত বছরের তুলনায় ২৯৫ হেক্টর জমিতে বেশী অাবাদ হয়েছে। কৃষিতথ্য অনুযায়ী সরেজমিনে গিয়ে এ রকম সরিষার চাষ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে অধিকাংশ সরিষার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। চরফ্যাসন উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের চরযমুনা গ্রামের কৃষক বাবুল মিঝি জানান, লেবার, সার, ট্রিলারের দাম বেড়েছে বিধায় পোষাচ্ছেনা, তাই সরিষা চাষ বহুলোক ছেড়ে দিয়েছে।তাছাড়া কুয়াশা, রোদ নাই, এরকম আর কিছুদিন থাকলে সরিষার দানা হবে না। নুরাবাদ ইউনিয়নের কৃষক জালাল মিয়া জানালেন, বৃষ্টিতে এবার সরিষা আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আবাদ খুবই কম হয়েছে। গতবার দাম কম পাওয়ায় এবার আবাদ কমে গেছে। একই কথা জানান, ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক আব্বাস আলী। আহাম্মদপুর ইউনিয়নের কৃষক ছগির মিয়া জানান, গত দু’’বছর ধরে ২ একর জমিতে সরিষার চাষ করছি। এতে প্রায় খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। কিন্তু অধিক বৃষ্টি, শীতের কুয়াশায় ফুল ঝরে যায় ও বিভিন্ন রোগের কারনে লোকসান দিয়েছি। তাই এখন থেকে সরিষা চাষ করবনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আবু হাসনাইন বলেন, বৃষ্টিতে এবার সরিষা আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আবাদ খুবই কম হয়েছে।তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অধিক বৃষ্টিপাত, আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় কৃষকরা সরিষা কম চাষ করেছে।