গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। এতে করে মাছের বাজারে বেশ খানিকটা স্বস্তি দেখা গেছে। অপরদিকে, চালের দাম বাড়তির দিকে।
শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার ও জুরাইন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ইলিশের দাম অনেকটাই হাতের নাগালে রয়েছে। নিম্ম আয়ের মানুষজনও ইলিশ মাছ কেনার জন্য ভিড় করছেন।
জুরাইন কাঁচাবাজারে পারুল বেগম এক হালি ছোট সাইজের (প্রতিটি ৫০০ গ্রাম) ইলিশ কিনেছেন। মুখে তার পরম পাওয়ার হাসি।
পারুল বেগম জানালেন, ‘আমি গার্মেন্টস কর্মী। এক মাস আগেও ইলিশের দাম শুনে ভয়ে কেনার চেষ্টা করতাম না। কিন্তু আজকে ইলিশের দাম অনেকটা কম। বাজারে অনেক ইলিশ এসেছে। চারটি ইলিশমাছ কিনলাম আটশ টাকা দিয়ে। সে কারণে খুব খুশি লাগছে!
কথা হয়, এ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ হোসেনের সঙ্গে। জানতে চাইলে মাসুদ বলেন, ইলিশের দাম ঈদের আগের থেকে কম। বাজারে মাছের প্রচুর যোগান রয়েছে। তবে গত কয়েকদিন থেকে দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। কারণ জানতে চাইলে এই মাছ ব্যবসায়ী বলেন, দুর্গাপূজার পর থেকে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এ জন্য দাম বাড়ছে। আবার অনেকে মাছ কিনে রাখছেন। সবাই কিনছেন বলে কিছুটা দামও বাড়ছে।
এই বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বড় ইলিশ (৯০০ গ্রামের বেশি) প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ছোট সাইজের (৫০০ গ্রামের বেশি) প্রতি পিস ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।
বাড়তিতে চালের দর
এদিকে, চালের বাজারে কয়েক দফা দাম বেড়েছে। তবে এ জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দোষারোপ করেছেন। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দুঃশ্চিন্তা দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ীতে মনির স্টোরে চাল কিনতে এসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মুরাদ। দরদাম করছেন। চালের দাম শুনে কিছুটা ক্ষোভ নিয়ে বললেন, ঈদে গ্রামে যাওয়ার আগে আটাশ চাল ৪৮ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। সেই চাল আজকের বাজারে ৫৫ টাকা কেজি! এটা কেমন দেশে আছি! প্রতিদিন দাম বাড়ছে। প্রতি কেজিতে সাত টাকা বাড়াতে আমি ক্ষোভে পাঁচ কেজি মোটা চাল কিনলাম। অথচ আমি ১০ কেজি চাল কেনার জন্য এসেছিলাম। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভাত মেপে মেপে খেতে হয়।
চালের দামের বাড়তি প্রসঙ্গে কথা হয়, যাত্রাবাড়ী চালের আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোক্তার হোসেনের সঙ্গে। জানতে চাইলে মোক্তার হোসেন বলেন, ঈদের আগে থেকেই তিন দফায় চালের দাম বেড়েছে। তিন দফায় দাম বেড়ে প্রতি কেজি চালে এখন চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, মিল মালিকদের একই কথা, ধানের দাম বেশি। এখন বলেন, আমাদের কী করার আছে!
দেখা গেল, খুচরা বাজারে আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে, ৫৫ টাকা প্রতি কেজি। গুটি স্বর্ণা ৪৮ টাকা কেজি, পারি চাল ৫২ টাকা, মিনিকেট ৫৮ টাকা ও রূপালি চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়।
অন্যদিকে, ঈদ ও মাছের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকার কারণে বাজারে বয়লার মুরগির দাম অনেকটাই কম। প্রতি কেজি সাদা বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।