ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। নোয়াখালী-৬ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ আয়েশা ফেরদাউসের হাতিয়া উপজেলা সদরের বাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে একদল দুর্বৃত্ত। ওই সময় বাড়ির ভেতরের চত্বরে একটি প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আয়েশা ফেরদাউস। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের ভাষ্য, হামলায় আয়েশা ফেরদাউসের ১০-১২ জন দলীয় কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ বলে জানা গেছে। আহত লোকজনের নাম-পরিচয়ের বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক ডেকে এনে সাংসদের বাড়িতে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম হামলার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সাংসদের বাড়িতে একটি প্রতিবাদ সভা চলাকালে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়েছে বলে হাতিয়া থেকে ওসি তাঁকে জানিয়েছেন।
এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, হাতিয়ায় একজন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-সার্কেল) রয়েছেন। বিষয়টি তিনি দেখছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের সেকু মার্কেটে যুবলীগের স্থানীয় কর্মী ও ১২ মামলার আসামি রিয়াজ উদ্দিনকে (৩২) কুপিয়ে আহত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রিয়াজের বাবা কোরবান আলী বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হাতিয়ার সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলীসহ ১৫৪ জনকে আসামি করা হয়। সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস হাতিয়ার বর্তমান সাংসদ।
স্বামীসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রতিবাদে আজ আয়েশা ফেরদাউস তাঁর উপজেলা সদরের লক্ষ্মীদিয়া এলাকার বাড়িতে এক প্রতিবাদ সভা আহ্বান করেন। বেলা ১১টার দিকে সভা শুরু হয়। সভার শেষ দিকে বেলা দুইটার দিকে আয়েশা ফেরদাউস যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন একদল দুর্বৃত্ত হঠাৎ বাড়ির উত্তর দিক থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সাংসদের বাড়ি থেকে দলীয় কর্মীরা পাল্টা ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর হামলাকারীরা সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগে সক্রিয় হয়ে ওঠা ব্যবসায়ী মাহমুদ আলীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অভিযোগ তুলে সাংসদের সমর্থকেরা ওই বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। এতে ওই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আয়েশা ফেরদাউস তাঁর বাড়িতে হামলার ঘটনার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ালী উল্যাহ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন এবং সম্প্রতি আওয়ামী লীগে সক্রিয় মাহমুদ আলীকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মাহমুদ আলীর বাড়ি থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এসে তাঁর বাড়িতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভা লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। তবে হামলায় ১০-১২ জন দলীয় কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
নিজ বাড়ি থেকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহমুদ আলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সাংসদের বাড়িতে তাঁদের কোনো লোক হামলা করেননি। সাংসদের লোকেরাই অতর্কিতে তাঁর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করেছে।