ভোলা নিউজ২৪ডটকম।।লালমোহন উপজেলায় ‘দুই শিশুর বিয়ে’ নিয়ে গুজব ছড়ানোর দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সোমবার (৬ মার্চ) সকালে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার (৫ মার্চ) সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই দুই শিশুর বিয়ে হচ্ছে দাবি করে কয়েকজন তরুণ ও যুবক শিশু দুটির গায়ে হলুদের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেশজুড়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা ওই ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে দুই শিশুর বিয়ে হচ্ছে দাবি করে পোষ্ট দিয়ে দেশজুড়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে তাদেরকে এ মামলায় আসামি করা হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখেছে, দুই শিশুর বিয়ে হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য। দেশজুড়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকজন তরুণ ও যুবককে এ মামলায় আসামি করা হবে। পুলিশ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে। দুই শিশুর পরিবারকে লালমোহন থানায় আসার জন্য বলা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘দুই শিশুর বিয়ে’ হচ্ছে দাবি করে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিও পোষ্ট দেওয়া হয়। যা মুহূর্তে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দুই শিশুর বিয়ে হচ্ছে এমন কথাও স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে। এরপরই ভিডিওটি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একাধিক সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদনও করেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বিয়ের গায়ে হলুদের জন্য যা যা প্রয়োজন হয়, শিশু দু’জনের গায়ে হলুদে সবকিছুই রয়েছে। তাদেরকে গায়ে হলুদ দেওয়ার সময় বিয়ের গানও বাজতে শোনা যাচ্ছে। শিশু দুইটির বাবা-মাসহ আত্মীয় স্বজনরা যেখানে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে উঠেন।
ঘটনাটি ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের বাকলাইয়ের দোকান সংলগ্ন বয়াতি বাড়ির। গায়ে হলুদে বসা ৭ বছরের ছেলের নাম মো. রাফসান ও ৫ বছরের মেয়ে কোহিনূর মারিয়া রাফসানের চাচার বোন। তারা দুজন বয়াতি বাড়ির রাসেল ও শিপন বয়াতির ছেলে-মেয়ে।
রাফসানের চাচা পিকু বয়াতি বলেন, শুক্রবার (৩ মার্চ) তার ভাতিজা রাফসানের আকিকা অনুষ্ঠান ছিল। সে উপলক্ষে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়। যেখানে দুষ্টুমির ছলে রাফসানের সঙ্গে তার ভাতিজি মারিয়াকে বসানো হয়। তাদেরই এক প্রতিবেশী ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে পোষ্ট করে ওই দুই শিশুর বিয়ে হচ্ছে বলে দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, ভিডিওতে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ রয়েছে। তবে ওই ব্যক্তির নাম এবং পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এরপর ফেসবুক থেকে ওই ভিডিও ডাউনলোড করে অনেকেই তাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিও ফুটেজ পোষ্ট করে দুই শিশুর বিয়ে হচ্ছে দাবি করে দেশজুড়ে গুজব ছড়ায়।