যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি রাশিয়ার টিকা কতটা নিরাপদ ও কার্যকর হতে পারে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রুশ সরকার করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।
সিএনএনের খবরে জানা যায়, ফাউসি বলেছেন, ‘আশা করি রুশরা টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণ করতে পেরেছে। তবে আমার সন্দেহ, তারা যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে তা করতে পেরেছে কি না।’ গত বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে সম্প্রচারের জন্য এবিসি নিউজের দেবোরাহ রবার্টসের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশ গতকাল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে পোস্ট করা হয়েছে।
অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগবিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফাউসি বলেন, টিকা থাকা আর টিকা নিরাপদ ও কার্যকর হওয়া আলাদা দুটি জিনিস। তিনি বলেন, ‘আমাদের এক ডজনের অর্ধেক বা তারও বেশি টিকা আছে। আমরা যদি মানুষকে অকার্যকর কিছু দিতে চাই, তাহলে সে সুযোগ রয়েছে। চাইলে এমনভাবে আমরা আগামী সপ্তাহেই টিকা আনতে পারি। তবে কাজটা এভাবে করা ঠিক হবে না।’
ফাউসি আরও বলেন, মার্কিনরা যখন রাশিয়া বা চীনের মতো দেশ থেকে টিকা উন্নয়নের ঘোষণা শুনবে, তাদের মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপত্তা ও কাজের মান বজায় রেখে চলতে হয়। রাশিয়ার টিকার উৎপাদনকারীরা মানুষের ট্রায়ালের জন্য কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে, ৫০ ভাগ প্রয়োজন পূরণ করতে পারলে তারা টিকা অনুমোদন করবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গতকাল মেইলের মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানায়, তারা রুশ বিজ্ঞানী ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তারা টিকার ট্রায়ালের পর্যালোচনা চেয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তাঁর দেশই প্রথম করোনার টিকা তৈরি করেছে। পুতিন করোনার টিকা সম্পর্কে বলেন, রাশিয়া যে টিকা তৈরি করেছে, তা স্থায়ী বা টেকসই প্রতিরোধী সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম।
রাশিয়ায় অনুমোদন পেতে যাওয়া টিকাটি যৌথভাবে তৈরি করেছে দেশটির গামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। টিকাটি এতে নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হলে তা স্বাস্থ্যকর্মী ও দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের প্রথমে প্রয়োগ করা হবে। নিবন্ধন দেওয়ার পর টিকাটি আরও ১ হাজার ৬০০ মানুষের ওপর প্রয়োগ করে এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হবে।
টিকা তাঁর এক মেয়ের শরীরেও দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন পুতিন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি টিকা মানবপরীক্ষার তৃতীয় ধাপে রয়েছে।