ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাঁধ যানবাহনের নিয়ন্ত্রণে ॥ লাঞ্ছিত হচ্ছে যাত্রী, ঘটছে দুর্ঘটনা

0
4

মো: আফজাল হোসেন :: ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে হচ্ছেটা কি ? যাত্রীদের চরম হয়রানী আর বেপারোয়া বোরাক, আটো আর মাহেন্দ্রের পার্কিংয়ের ফলে চরম ভোগন্তির সিকার সাধারন যাত্রীরা। নারী-পুরুষ সকলেই। সিরিয়ালের নামে উঠানো হচ্ছে হাজারো টাকা নেই কোন তদারকি। প্রশাসন বলছেন দেখবো।
সরেজমিন ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে গিয়ে নজরে আনে যাত্রী হয়রানী আর বাঁধের উপর যানবাহন রাখার দৃশ্য। কথা বলার সাহস পর্যন্ত নেই কারোই। স্থানীয় ভাবে কিছু গাড়ির চালক আর চাঁদাবাজদের কারণে কথা বলার সুযোগ নেই। কিছু বলার আগেই তেরে আসে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হলেও সেখানে এখন বিভিন্ন যানবাহনের স্ট্যান্ডে পরিনত হয়েছে। যে কারণে সাদারন যাত্রীদের লঞ্চ উঠা কিংবা লঞ্চ থেকে নামার কোন অবস্থা নেই।

গ্রীণ লাইনে আসা যাত্রী রোকসানা বিবির কোলে ৩ মাসের সন্তান, আর হাতে আড়াই থেকে ৩ বছরের আরেক সন্তান। লঞ্চ থেকে নেমে সে বাঁধে উঠবে সেই অবস্থা নেই। প্রবেশ পথ এবং পুরো বাঁধ অটো, বোরাক, মাহেন্দ্রো আর মটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণে। তার উপর চালকদের যাত্রী নেয়ার জন্য ধাক্কা-ধাক্কিতে পড়ে গিয়ে অল্পতে রক্ষা কোলের শিশুর। পায়ে হাটার মত কোন জায়গা ফাকা নেই বাঁধের উপর। মটরসাইকেল যাত্রী তুলে নিয়ে উঠতে গিয়েই পড়তে গিয়ে অল্পের জন্য রক্ষা অপর যাত্রীদের সহযোগীতায়। এরই একটু আগে একটি বোরাক বাঁধের উপর দিয়ে যাবার সময় উল্টে পড়ে একটা দোকানের উপর। এভাবে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে এই লঞ্চঘাট এলাকায়।
এদিকে লঞ্চে উঠবেন চরপ্যাশনের আব্দুল কাদের নামের এক বৃদ্ধ। তিনি হাতে ব্যাগ নিয়ে হেটে আসতে পারছে না বাঁধের উপর গাড়ী থাকার কারণে। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃদ্ধ বলেন, দেশে কি কোন প্রশাসন নেই এসব অত্যাচার দেখার জন্য ?
পাশ থেকে ভোলা সদরের আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, আমি অসুস্থ্য ঢাকা যাব। অথচ পুরো বাঁধটি গাড়ীতে ঠাসা। পায়ে হাটার মত অবস্থা নেই। ছেলের কাঁদে ভড় দিয়ে কোন মতে লঞ্চে উঠলেন আর বল্লেন, এটা কোন ব্যবস্থা। যাত্রীদের এভাবে হয়রানীর সিকার হতে হবে।
আরো জানা গেছে, একটি লঞ্চ আসলেই ঝাপিয়ে পড়ে, আর চরম বেপারোয়া হয়ে উঠে এসব গাড়ীর চালকরা। যে যেভাবে পারছে যাত্রী এবং তাদের ব্যাগ নিয়ে টানা হেচরা করছে। অথচ পুলিশের এই লঞ্চঘাটে দ্বায়িত্ব থাকার কথা থাকলেও দেখা মিলেনি কারোই সাথে। শেষ সময় পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কনেস্টবল মাসুদুর এর সাথে দেখা। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিছুই করার নেই। কেউ শোনে না কারোই কথা। লাইনম্যান রয়েছে তারাই সব নিযন্ত্রণ করছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনা, যাত্রী হযরানীর কথা স্বীকার করে বলেন, এসব ঘটনা আমরা আমাদের স্যারদের জানাই।

 

লঞ্চঘাটের দ্বায়িত্বে থাকা একজন বলেন, (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) মাসুম আর মনির নামের দুজন আছে তারাই সিরিয়ালের নামে গাড়ী প্রতি ২০টাকা করে নিচ্ছে। যে কারণে কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রতিদিন দূর্ঘটনা ঘটলেও এবং যাত্রী হয়রানী আর লাঞ্ছিত হলেও কিছুই করার থাকে না। তারা অবৈধ ভাবে টাকা তুলে আর যা ইচ্ছা তাই করছে। এদের কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি। অথচ আগের মত রাস্তায় গাড়ীগুলো সিরিয়াল দিয়ে থাকলে যাত্রীরা সুন্দর ভাবে উঠা নামা করতে পরত। এছাড়া একজন রোগী এ্যাম্বুলেন্সে আসলে তাকে ঘাটে আনা যায না।
টাকা তোলার বিষয় অভিযুক্ত মো: মনির বলেন, আমি আর মাসুম দুইজনে টাকা তুলে থাকি। ২০টাকা করে নেই, কেউ দেয় আবার কেউ দেয় না। আমরা সিরিয়ার ম্যান্টেইন করি। কোন বৈধতা বা ইজারা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, কোন ইজারা নেই এমনি তুলি। আমরা দুইজনে ভাগ করে নেই। দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, এখন থেকে যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো এবং মাঝখানে ফাকা রাখবো যাতে মানুষ চলাচল করতে পাড়ে।
এ বিষয়ে ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জানলাম, দেখছি কি করা যায়।

LEAVE A REPLY