ভোলা নিউজ ২৪ ডটকম।। একের পর এক ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় জীবন দিতে হচ্ছে অসহায় মায়ের সন্তান না হয় প্রসুতি মায়ের। এর পরেও প্রশাসনের টনক নড়ছে না কোন ভাবেই। এবার ভোলায় ডাক্তার আফরোজার ভুল চিকিৎসায় আছিয়া বিবি (৩৫০ নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃর্ত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
ভোলা শহরের ডায়াবেটিস হাসপাতালে প্রাইভেট ভাবে ডাক্তার দেখালে ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিহত আছিয়া জেলার সদর উপজেলা শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী। আব্দুর রহমান পেশায় জেলে। চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীরা স্বজনসহ এলাকাবাসী।যদিও চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত প্রসূতির পরিবার জানায়,রোববার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় প্রসূতি বিবি আছিয়া বিবি শহরের ডায়বেটিস হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ আফরোজা বেগমকে দেখাতে গেলে তিনি প্রসূতিকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।
এ সময় তাকে বিভিন্ন ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে বলেন। অস্ত্রোপচারের পর একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলেও রাত থেকেই রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে সেই রোগীকে কোনো চিকিৎসা করেনি ডাক্তার বা হাসপাতালের কোন স্টাফ। সোমবার সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেলে প্রেরণ করলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।
রোগীর স্বামী আব্দুর রহমান বলেন, সিজারের পর আমাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। তারা রোগীর চিকিৎসায় অবহেলা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আবদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালেই রোগীর মৃত্যু হলেও তারা তা আমাদেরকে বুজতে না দিয়ে বরিশালে রেফার করেছে।
রোগীর ভাগিজা মো: জিন্নাহ বলেন, রোগীকে সরকারি হাসপাতালে সিজার করানোর অনুরোধ করলেও তারা ভোলা ডায়াবেটিস হাসপাতালে সিরাজ করায়। তারপর থেকে রোগীর খিঁচুনি শুরু হয়ে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে আইসিইউ লাগবে বলে বরিশালে রেফার করে।
ডায়াবেটিস হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ ইসমাইল হোসেন বলেন, সিজারের পর সোমবার সকালে রোগী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তাকে জরুরী অক্সিজেন এবং আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ভোলাতে আইসিইউর সুবিধা নেই। আমাদের এখানে থাকা অবস্থায় রোগী সুস্থ ছিল। সিজারের পর কোন সমস্যা ছিল না।
অভিযোগ অস্বীকার করে গাইনি চিকিৎসক ডা. আফরোজা বেগম বলেন, অপারেশন সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ভুল চিকিৎসা বা অবহেলায় তার মৃত্যু হয়নি। আমরা রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি।তিনি আরও বলেন, রোগী কিছুটা বয়স্ক ছিল। এটা তার পঞ্চম সন্তান। বয়স্ক মানুষের হার্ট অ্যাটাকে ঝুঁকি থাকে। হয়তো সে কারনেই তার মৃত্যু হতে পারে।
উল্লেখ,এর আগে চরফ্যাশনের ইকরা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় দুই নবজাতক শিশুর মৃর্ত্যু হয়েছে। অথচ এসব বিষয় টনক নড়ছে না প্রশাসনের। বরাবর অভিযোগ উঠছে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধ। অদক্ষ স্টাফ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সারাদেশে অভিযান হলেও ভোলায় নামমাত্র।