আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি: খালেদা

0
347

ভোলা নিউজ ২৪ ডট নেটঃ  জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চতুর্থ দিনের মতো অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। শেষ করার সময় বিচারককে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, মাননীয় আদালত আজকের মতো শেষ করি। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। বিচারক এই মামলায় সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়ে রায় দেবে বলেও আমি আশাবাদী।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশী বাজার আলীয়া মাদরাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে চতুর্থ দিনের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিশেষ আদালতের বিচারক এ মামলায় অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়ার জন্য ১৬ নভেম্বর ধার্য করেন।

অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার স্থায়ী জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেন। এদিন দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আদালতে তিনি বক্তব্য দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে আদালতে উপস্থিতি হন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়া এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করার জন্য দিন ধার্য ছিল।

চতুর্থ দিনের বক্তব্যে বিচারককে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই যে, আপনি সাহস ও সততার সঙ্গে সরকারের প্রভাব মুক্ত থেকে আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার করবেন। আমাদের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন করা হলেও সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদাহরণ সেই দাবিকে প্রতিনিয়ত প্রতারিত করছে।

কেউ কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন। কেউ শিক্ষা নেন না মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, যারা শিক্ষা নেন তারা সম্মানীত হন। আর যারা শিক্ষা নেন না তাদের জায়গা হয় ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কথাও তুলে ধরেন সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আজ যারা ক্ষমতায় আছে সেই আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, একসময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র জামায়াত ইসলামী মিলে দেশে কি ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল তা আপনি জানেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের নামে কি সহিংস হানাহানি ও নৈরাজ্যকর অবস্থার সৃষ্টি করেছিল, তা সকলেই জানেন।

দিনের পর দিন হরতাল, অবরোধে তারা জনজীবনকে অচল করে দিছে। রেলস্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

LEAVE A REPLY