বালু উত্তোলন ও ক্লিনিকের অনিয়ম বন্ধ করতে হবে..বিভাগীয় কমিশনার

0
389

মোঃ আফজাল হোসেন ॥ ভোলার তেতুলিয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আর ডাক্তার ও ক্লিনিকের অব্যাবস্থাপনা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। এসব ক্লিনিক গুলোতে প্রতিনিয়ত সাধারন মানুষ প্রতারনার স্বিকার হচ্ছে। একই সাথে নিষিদ্ধ গাড়ীর বিষয় ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবী বলে মন্তব্য করেছে ভোলার সুধীজনরা।

গতকাল সকালে ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস এর সাথে জেলার সরকারী কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক এর সভাপতিত্বের সুধী সমাবেশে বক্তারা বলেন,অপরার সম্ভাবনাময় জেলা হচ্ছে ভোলা। সফল বানিজ্যমন্ত্রী ভোলাকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য অন্তত ২হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্ধ করিয়েছেন। নদীর তীর রক্ষায় যার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

অথচ একটি অসাধু চক্র প্রতিদিন একাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে যা ভোলার তীর সংরক্ষন হুমকির মুখে পরবে। প্রকাশ্যে এসব ঘটনা ঘটনা ঘটলেও কেউ কিছুই বলছে না। এছাড়া শহর এবং বিভিন্ন উপজেলা গুলোতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নামে ক্লিনিক। যেসব ক্লিনিকে নেই দক্ষ কোন টেকনিশিয়ান,ডাক্তার। ডাক্তারী পড়াশুনা করছে এসব ছাত্ররা কোন কোন ক্লিনিকে রোগী দেখছেন কি ভাবে তা রয়েছে অজানা। অনবিঞ্জ টেকনিশিয়ানরা রোগীদের টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিচ্ছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সেবনেরও মারা যাচ্ছে রোগী। শুধু তাই নয়,হাসপাতালে ডাক্তার সংকট থাকলেও যা আছে তারা প্রাইভেট প্রাকটিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বেশি।

হাসপাতালের রোগীদের সময় দিচ্ছে কম। এদেরকে হাসপাতালে গেলে না পাওয়া না গেলেও প্রাইভেট ক্লিনিকে পাওয়া যায়। রয়েছে ব্যপক নিষিদ্ধ নছিমন,করিমন,বডবডি,বোরাক,ব্যাটারী রিক্সা যা বেপারোয়া চালানোর ফলে প্রতিদিন অশংখ দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্ভাবনাময় জেলার পরিবেশ ভালো রাখতে এসব বিষয় নজর দেয়া জরুরী। দরকার ভোলা-বরিশাল ব্রীজ নির্মান করা,যাতে দ্রুত ভোলার মানুষ দেশের অন্যসব জেলাগুলোতে যাতাযাত করতে পারে। অপার সম্ভাবনাময় জেলা ভোলা পর্যটকদের আকর্ষন করার জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান থাকলেও তা তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা বলা হলেও নোট বই পাওয়া যাচ্ছে সর্বত্র। ভোলাতে নোট বইয়ের বিশাল চালান পাওয়ার পারও তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে সভায় তুলে ধরা হয়। নোট বই বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠে সভা থেকে। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াার পাশাপাশি কোচিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোরালো দাবী তুলে ধরেন সুধীজনরা। মেঘনাকে মুক্ত রাখার জন্য সকল ধরনের নিষিদ্ধজাল তুলে দেয়ার জোরালো দাবী উঠে সভায়। মা ইলিশের অভিযান শেষ হতে না হতেই জেলো জাল হাতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়বে মাছ ধরতে তবে ছোট ছোট জাটকা ইলিশগুলো নিধন বন্ধ করতে না পারলে মা ইলেিশর অভিযান ব্যর্থ হবে মনেরও মন্তব্য করেন লালমোহন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ গিয়াস উদ্দিন। তিনি আরো বলেন,দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে,তবে গুনগন মান দেখার কেউ নেই। কাজের তিনমাস পরই ইট বের হয়ে আসে। এসব উন্নয়ন দেখার কেউ নেই। সরকার এর দুর্ণাম হচ্ছে এসক কাজের জন্য। এসব বিষয় নজর দেয়া জরুরী। বিভিন্নস্থানের বিদ্যুতের তার ঝুকিপূর্ন অবস্থায় আছে যা মানুষের মৃত্যুর কারন হয়।

এসব অভিযোগ শোনার পর বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস বলেন্,সুধীজনরা এবং সরকারী কর্মকর্তারা যেসব কথা বল্লেন,সমস্যার কথা তা দ্রুত সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসককে বল্লেন। তিনি বলেন,এসব অভিযোগ সব গুরুক্তপুর্ন। প্রধানমন্ত্রী বরিশালকে সিঙ্গাপুর দেখতে চান। যদি নদী থেকে এভাবে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হয়, তা হলে এসক সময় ভোলা ঝুকির মুখে পড়বে। তাছাড়া হাজার হাজার কোটি টাকা নদীর তীর সংরক্ষনের জন্য এনে তার ফলাফল কি হবে। এছাড়া ক্লিনিকের সালিকরা যাতে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেবিষয় খেয়াল রাখতে হবে। এসব ক্লিনিকে গুলোতে অভিযান চালাতে হবে।এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন,বেশ কয়েকবার ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকজন ভূয়া ডাক্তার আটক করা হয়েছে। মোটা অংকের টাকা জরিমানা ও সিল করে দেয়াও হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।এসময় বেশ কিছু ভালো কাজের জন্য জেলা প্রশাসককে বক্তারা অভিনন্দন জানান।সভায় আরো বক্তব্য রাখেন,কোস্টগার্ড দক্ষিন জোন এর জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন ভুইয়া,জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুর রহমান,লালমোহন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ গিয়াস উদ্দিন,মনপুরা উপজেলা চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান চৌধুরী,চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আখন্দ,সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ সাব্বির হোসেন,পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ শাহ আলম,আইনজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক এড.নুরনবী,চেম্বার অব কর্মাস পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম,ভোলা প্রেসক্লাব আহবায়ক মোঃ আবু তাহের,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ভোলা জেলা সভাপতি ও এনটিভি’র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও ভোলা নিউজ ২৪ এর সম্পাদক মোঃ আফজাল হোসেন,সিনিয়র সাংবাদিক যুগান্তর প্রতিনিধি অমিতাব রায় অপু, চ্যানেল ২৪ প্রতিনিধি আদিল হোসেন তপু প্রমুখ।

LEAVE A REPLY