বন রক্ষায় রোহিঙ্গাদের জ্বালানিকাঠ দেওয়ার তাগিদ

0
356

বনাঞ্চল বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ হিসেবে জ্বালানিকাঠকেও (লাকড়ি) যুক্ত করার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয় বন কর্মকর্তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে পাহাড় রক্ষায় সতর্ক হতে হবে। বিশ্বের বৃহৎ সমুদ্রসৈকতের জেলা কক্সবাজারের পরিবেশ বিপর্যয়ের দায় বহন করতে হবে গোটা বিশ্বকেই।

চাল, ডাল, লবণ, তেল ত্রাণ হিসেবে মিললেও চুলা জ্বালানোর জন্য লাকড়ি জোগাড় করতে হয় বন থেকে এনে অথবা কিনে।

কেনার জন্য ক্যাম্পের ভেতরেই রয়েছে বাজার। লাকড়ি হাত বদল করে দুইপয়সা রোজগারও হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।

স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, গ্রাম থেকে ২৫-২৭ টাকায় কিনে তিনি ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে করে দু-তিন টাকা লাভ হচ্ছে তাঁর। এরকম অনেকেই এই লাকড়ি বন থেকে আনছে বিনা পয়সায়। কিনে বা বিনে পয়সায় যেটাই হোক টন কে টন জ্বালানির মূল উৎস পাহাড়ি বন।

পরিবেশও বন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির হিসাব অনুযায়ী প্রথম ৪৫ দিনেই রোহিঙ্গাদের কারণে ধ্বংস হয়েছে ১৫০ কোটি টাকার বনজ সম্পদ। স্থানীয় বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী রোহিঙ্গারা প্রতিদিন পোড়াচ্ছে ৭৫০ টন লাকড়ি।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (কক্সবাজার দক্ষিণ) আলী কবির বলেন, দেড় লাখ পরিবারের জন্য দৈনিক যদি পাঁচ কেজি করেও লাকড়ি ধরা হয়, সে ক্ষেত্রে সাড়ে সাত লাখ কেজি লাকড়ির প্রয়োজন হবে। যেগুলোর অধিকাংশই বন থেকে আসছে। বনজ সম্পদ রক্ষায় ত্রাণের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জন্য যদি লাকড়ির বিষয়টি যুক্ত করা যায় সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজারের পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ সেন বলেন, এভাবে যদি পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ে তবে তার মূল্য সমগ্র জাতিকে, পুরো বিশ্বকে দিতে হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফে বনাঞ্চল উজাড় হওয়া এরকম পাহাড়ের সংখ্যা কমপক্ষে ১০টি। পরিবেশবাদীদের এ নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঝুঁকির আরো একটি দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালংয়ে তিন হাজার একর জায়গায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে সীমাবদ্ধ রেখে পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানো যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

LEAVE A REPLY