ভোলা নিউজ২৪ডটনেট।। ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দুটো দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে বলে শঙ্ক প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়। বলা হচ্ছে, কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এ-দুটো দেশের মধ্যে অব্যাহত বিরোধ চলছেই।
সামরিক যুদ্ধে জড়ানোর অতীত ইতিহাসও তাদের রয়েছে। তাই কাশ্মীর ইস্যু নিয়েই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ লেগে যাতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ওই গবেষণার গবেষক অ্যালান রোবোক বলেন, শুধু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয়, হতে পারে ভারত ও চীনের মধ্যেও। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে হওয়ারও অনেক কারণ আছে। তবে আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে বেছে নিয়েছি, কারণ কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এই দু’টি দেশের মধ্যে অব্যাহত বিরোধ চলছেই। সামরিক যুদ্ধে জড়ানোর অতীত ইতিহাসও তাদের রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী হুডভাই মনে করেন, অন্যান্য কারণ থাকলেও কাশ্মীরই হবে প্রধান কারণ। কাশ্মীরের পরিস্থিতি যতোই শান্ত করা যাবে, পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকিও ততোটা কমে আসবে।
দুর্ভাগ্যজনক হলো সেরকম কিছুই হচ্ছে না। এছাড়াও পরিবেশগত কিছু পরিবর্তনও পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে দিতে পারে।
পাকিস্তানের এই পরমাণু বিজ্ঞানী বলেন, পাকিস্তানের বেশিরভাগ পানি আসে হিমালয় থেকে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের সব হিমবাহ গলে উধাও হয়ে গেলে কাশ্মীর পাকিস্তানের জন্যে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে পানির উৎসের জন্যে। এনিয়ে যদি সমঝোতা না হয় তাহলে তো যুদ্ধের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
সাবেক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ব্যানার্জি বলেন, সন্ত্রাসবাদের মতো আরো কিছু ইস্যুও যুদ্ধের কারণ হতে পারে। ২০০৮ সালে পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসীরা এসে মুম্বাইয়ে আক্রমণ করেছিল। এরকম আক্রমণ আবারও হলে তখন পরিস্থিতি অন্য রকমের হয়ে যেতে পারে।
তবে পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী হুডভাই মনে করেন, অন্যান্য কারণ থাকলেও কাশ্মীরই হবে প্রধান কারণ। তিনি মনে করেন, পানির কারণেও এই যুদ্ধ হতে পারে। তিনি বলেন, ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে দু’টি দেশের কেউই খুশি নয়। যখন উভয়পক্ষ সমান সমান অখুশি হয় তখন মেনে নিতে হয় যে আমি যদি আরো বেশি খুশি হতে চাই তাহলে আমার প্রতিপক্ষ আরো বেশি অখুশি হবে। তখন যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে, সুইডিশ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসেবে পাকিস্তানের একশ ৬০টি আর ভারতের আছে একশ ৫০টির মতো পারমাণবিক বোমা। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান চারশ থেকে পাঁচশ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত করে ফেলবে।
ইসলামাবাদে কায়দে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরমাণু বিজ্ঞানী হুডভাই বলেন, এই দু’টি দেশের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বেড়েই চলেছে। যদিও এসব তথ্য অত্যন্ত গোপনীয় তারপরেও ধারণা করা হয় যে পাকিস্তানের কাছে হয়তো ১০ থেকে ২০টির বেশি বোমা আছে। ভারতের এখন পারমাণবিক ডুবোজাহাজও আছে। পাকিস্তানও এরকম ডুবোজাহাজ নির্মাণ করছে। ফলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এসব অস্ত্র নিক্ষেপের ক্ষমতা ও সংখ্যা দু’টি দেশেরই বৃদ্ধি পাচ্ছে।