ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট।। ঘটনা ভারতের রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠের গুরুগ্রামের সেক্টর ৪৬-এর জলবিহার কলোনির। শনিবার সকালে দিনেশ নামে এক চাওয়ালা স্থানীয় থানায় হাজির হলো। দিনেশের বাসা ওই কলোনিতে।
দিনেশ পুলিশকে জানায়, তার ঘর থেকে কেমন যেন গন্ধ আসছিল কয়েকদিন ধরে। তবে তাতে পাত্তা না দিয়ে চলছিল। কিন্তু শেষতক আর থাকা যাচ্ছিল না। গন্ধ অসহনীয় রূপ নেয়। শেষে ঘরজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে যা পান তাতে তার মাথা ঘুরে যায়।
তার বিছানার নিচে পাওয়া গেছে এক নারীর লাশ। বক্সখাট-এর নিচে (বক্সে) লাশটিকে পাঁ ভাজ করে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পোস্ট মর্টেমে জানা যায়, মরদেহটি পাঁচদিনের পুরনো। অর্থাৎ, পাঁচদিন যাবত ওই লাশের ওপরে বিছানায় ঘুমিয়ে কাটিয়েছে দিনেশ!
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, লাশটি ববিতা নামের এক নারীর যার বয়স ৩০ বছর।
তদন্তে আরো জানা যায়, চায়ের ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে দিনেশের একটা ট্যাক্সিও ছিল যা সে ভাড়ায় চালাত। গত দুই মাস ধরে রাজেশ নামের এক চালককে ট্যাক্সিটি চুক্তিতে দিয়েছিল। বিশ্বস্ত হওয়ায় তার ঘরের চাবিও দিয়ে রেখেছিল রাজেশকে।
দিনেশের বিছানার নিচ থেকে পাওয়া লাশটি রাজেশের স্ত্রী ববিতার।
দিনেশ জানায়, গত ১৯ জানুয়ারি সে গ্রামের বাড়ি যায়। ফিরে আসে ২১ জানুয়ারি (সোমবার)। কিন্তু বাসা তালাবদ্ধ পায়। চাবির জন্য রাজেশকে ফোন করেও না পেয়ে বিকল্প চাবি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর ২৫ তারিখ শুক্রবার পর্যন্ত ৫দিন পার হয়। হাল্কা হাল্কা দুর্গন্ধ টের পাওয়া যাচ্ছিল দুয়েকদিন ধরে তবে গন্ধটি শুক্রবার আর সহ্য করা যাচ্ছিল না। তবে পুরো ঘর তল্লাশি চালিয়েও কিছু মেলেনি।
এরপর যখন বিছানার দিকে নজর দিলেন তখনি সমাধান হলো গন্ধ রহস্যের। খাটের নিচের বক্সে পাওয়া গেল ববিতার লাশ।
ধারণা করা হচ্ছে রাজেশ তার স্ত্রী ববিতাকে হত্যা করে সেখানে লাশ লুকিয়ে রেখে পালিয়েছে।
ববিতার পরিবার জানায়, মাত্র ছয়মাস আগে রাজেশের সঙ্গে বিয়ে হয় ববিতার। তবে গত ১০ বছর ধরে আগের ঘরের ৫ সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কাছেই একটি বাসায় সে বসবাস করে আসছিল।
২১ তারিখ ভোরে দুজন একসঙ্গে নিজেদের ঘর থেকে বের হয়।
ববিতার ১২ বছর বয়সী মেয়ে জানিয়েছে, তার মায়ের সঙ্গে সৎপিতার নিয়মিত ঝগড়া হতো। রবিবার রাতেও খুব ঝগড়া হয় তাদের। তখন ববিতাকে হত্যার হুমকিও দেয় রাজেশ।
তবে পরদিন দুজন একসঙ্গে বের হয়। এরপর থেকে তাদের দুজনের খোঁজ ছিল না। ২৫ তারিখ ববিতার লাশ মিললেও রাজেশ এখনও নিখোঁজ। পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে।
ধারণা করা হচ্ছে স্ত্রীকে কোনোভাবে ভুলিয়ে বোকা বানিয়ে দিনেশের ঘরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে রাজেশ।