তৃণমূল সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়, শুধু ওপরে একটু উল্টাপাল্টা হয়

0
630

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের প্রশংসা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের কিন্তু একটা গুণ আছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু ওপরে গেলে একটু উল্টাপাল্টা হয়ে যায়।

শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার আগস্টের শেষ দিনে জাতির পিতার ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভার ভাষণে এ কথা বলেন। দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ছয় দফা আন্দোলনে সময়কার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন আমি দেখেছি, আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতা ৮ দফা নিয়ে মেতে ওঠেন। কিন্তু আমার মা বলেন, উনি (বঙ্গবন্ধু) ৬ দফা দিয়ে গেছেন, এর বাইরে একপাও যাওয়া যাবে না।’

ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মায়ের অনন্য ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, সেদিন ভূরি ভূরি পরামর্শ ভরা কাগজে ঘর ভরে গিয়েছিল। তাঁর (শেখ হাসিনা) মা দুপুরের খাবার পর বঙ্গবন্ধুকে একটু বিশ্রামের সুযোগ করে দেন। সেই ঘরে গিয়ে তাঁর (শেখ হাসিনা) উপস্থিতিতে তাঁর মা বলেন, ‘সামনে তোমার জনগণ অপেক্ষা করছে। পেছনে কিন্তু ইয়াহিয়া খানের বন্দুক। এই এত মানুষের ভাগ্য তোমার হাতে। কারও কথা শোনার দরকার নাই। তোমার নিজের মনে যে কথাটা আসবে, কারণ সারা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছ এবং তুমি জানো কী চাও এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য কোনটা ভালো, তোমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না। কাজেই তোমার মনে যে কথাটা আসবে, তুমি সেই কথা বলবা।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন ১৫-২০ মিনিট শুয়ে থাকার পর আব্বা যাওয়ার জন্য তৈরি হলেন। আব্বা চলে গেলেন।’ এ সময় তাঁরাও পেছন পেছন গাড়ি নিয়ে যান এবং স্টেজের পেছনেই ছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই আমাদের চলতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগকে এটাই বলব যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সব সময় বলতেন, “ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস।” কাজেই ওই কথাটা যেন ছাত্রলীগ কখনো ভুলে না যায়। ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি কর্মীকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাহলেই এ দেশকে আমরা গড়ে তুলতে পারব।’

বাংলাদেশকে বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যেকোনো প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ তিনবার সরকার গঠন করেছে বলেই বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা এমনি এমনি হয়নি। যে শিক্ষা পেয়েছি বাবার কাছ থেকে, যে শিক্ষা পেয়েছি মায়ের কাছ থেকে—দেশকে ভালোবাসা, দেশের কল্যাণে কাজ করা, দেশের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করা, দেশের জন্য যেকোনো ঝুঁকি নেওয়ার মতো সাহস রাখা—একজন রাজনীতিকের জীবনে যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্ট তারা কী করেছে—আমার মাকে তারা হত্যা করেছে। আমার ভাই কামাল-জামালকে হত্যা করেছে। তাদের নবপরিণীতা বধূ সুলতানা-রোজী তাঁদের হত্যা করেছে। ছোট ১০ বছরের রাসেলকেও তো রেহাই দেয়নি। তাঁকেও তো তারা হত্যা করেছে। একই দিনে আমার তিন ফুপুর বাড়িতে আক্রমণ করে পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া, খালেদা জিয়া, এরশাদ—সবাই জাতির পিতার খুনিদের মদদ দিয়েছে। ভোট চুরি করে তাদের সংসদে বসিয়েছে। তাদের নানাভাবে উৎসাহ জুগিয়েছে।’

ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বার্ষিক প্রকাশনা ‘জন্মভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন।

LEAVE A REPLY