অনলাইন ডেস্ক : গতকাল সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের স্পেশাল স্ট্যাটাসের অবসান ঘটিয়ে একে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকার। এ প্রসঙ্গে অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন রাহুল গান্ধী। তিনি টুইট করে জানান, এই পদক্ষেপের ফলে জাতীয় নিরাপত্তায় তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়বে।
তিনি তাঁর টুইটারে লেখেন, ‘জাতীয় সংহতির কোনো উন্নতি হবে না এভাবে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিভক্ত করে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বন্দি করে এবং সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। এই দেশ মানুষের জন্য, জমির প্লটের জন্য নয়। ক্ষমতার এই অপব্যবহারের ফলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তায় তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়বে।’
আজ মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দলের মতানৈক্য প্রসঙ্গে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কংগ্রেস সাংসদদের বৈঠক হয়। আর সেখানেই ঠিক হয়, এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কী অবস্থান নেবে দল। তারপরই রাহুল এই টুইট করেন।
National integration isn’t furthered by unilaterally tearing apart J&K, imprisoning elected representatives and violating our Constitution. This nation is made by its people, not plots of land.
This abuse of executive power has grave implications for our national security.
কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোনো ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত। আর এ অনুচ্ছেদটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এর ভিত্তিতেই কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দেয়। এ ছাড়া পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয়।
সোমবার সংসদে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের তুমুল বাধা ও বাগবিতণ্ডার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
এ মর্মে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষরও করেছেন।
এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মন্ত্রিসভার ওই বৈঠক শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের সুবাদে কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধু সেখানে বৈধভাবে জমি কিনতে পারতেন, সরকারি চাকরি করার সুযোগ পেতেন এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন।
ওই অনুচ্ছেদ বিলোপের বিষয়টি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির পুরোনো রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোর একটি। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের ফলে সেখানে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।