কোস্ট ট্রাস্টের করোনা ভাইরাস সচেতনতা জরিপ

0
104

উপকূলে ৪৯% নি¤œবিত্ত মানুষের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে ধারণা নেই ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২০: উপকূলে দীর্ঘদিন করে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট করোনা ভাইরাস বিষয়ে উপকূলের মানুষের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে একেবারেই ধারণা নেই ৪৯% নি¤œবিত্ত মানুষের। ৭৪% উত্তরদাতা আইইডিসিআর এবং এর সেবা সম্পর্কে জানেন না। কোস্ট সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। কক্সবাজার ও ভোলা জেলায় দৈবচয়নের মাধ্যমে বাছাইকৃত নি¤œআয়ের খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা
করে কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ। এই জরিপ সম্পর্কে সংস্থার নির্বাহি পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উপকূলের দরিদ্র মানুষ কিভাবে
সম্পূর্ণ অজানা এই বিপর্যয় মোকাবেলা করছে তা জানার জন্যই কোস্ট এই গবেষণা করেছে। তিনি বলেন, উপকূলের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই সংস্থা ১৯৯৮ সাল থেকে কাজ করে আসছে। করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে উপকূলের নি¤œ আয়ের মানুষের প্রস্তুতি কেমন, কতটা সঠিক তথ্য তারা জানেন এবং সর্বোপরি কতটুকু তারা মানছেন বা মানতে পারছেন তা জানাই ছিল এই গবেষণার উদ্দেশ্য। কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ থেকে এ কথা বলা হয়। উত্তরদাতাদের মধ্যে নারী ছিলেন ৪৭% এবং পুরুষ ৫৩%। উত্তরদাতা নারীদের ৮০% গৃহিনী এবং বাকিরা শিক্ষার্থী বা পড়াশোনার বাইরে থাকা কিশোরী ও বৃদ্ধা। এ ছাড়াও ১০% কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন ১৮% ,ক্ষুদ্র বাবসায়ী ১৯% এবং ১৩% জেলে। জরিপের জন্য উপকূলের দুইটি জেলা হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রভাবিত কক্সবাজার এবং দ্বীপ জেলা ভোলা বাছাই করা হয়। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন চর হিসেবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এবং ভোলার চর মোতাহার বাছাই করা হয়। করোনা ভাইরাস যেহেতু স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ কারণে সরকারি বেসরকারি সকল প্রচারণায় নিয়মিত হাত ধোয়া এবং তার নিয়মকানুন সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তারপরও এই জরিপে দেখা গেছে, ৪৯% উত্তরদাতা হাত ধোয়ার মৌলিক বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না। ৪৩% উত্তরদাতা বলেছেন, তারা হাত ধোয়ার বিষয়টি মেনে চলতে পারছেন না। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিভাবে ছড়ায় এমন প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায় ২৬% মানুষের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ৫৩% উত্তরদাতা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক তথ্য ও লক্ষণ সম্পর্কে অবগত নন। হাঁচি বা কাশি দেবার শিষ্টাচার সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায়, ৬৪% উত্তরদাতা টিস্যু বা রুমাল অথবা কনুইয়ের ভাঁজের কথা উল্লেখ করেন। বাকি ৩৬% উত্তরদাতা এ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না। প্রায় শতভাগ গৃহিনী উত্তরদাতা জানান, তারা করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতা বিষয়ক তথ্য সরাসরি পাননি।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে যারা বাইরে যান, তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জেনেছেন। জরিপে দেখা যায়, উপকূলের নি¤œ আয়ের মানুষের পক্ষে ঘরে থাকা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। ৩৭% উত্তরদাতা বলেছেন, তারা বাজার করার জন্য এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পর পর বাইরে যান। বাকি ৬৩% একদিন বা দুই দিন পর পর বাজারে যান। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কে ধারণা নেই ২৪% উত্তরদাতার। ৬৬% উত্তরদাতা বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে তাদের এলাকার মসজিদে নিয়মিত মুসল্লীর সংখ্যা কমেছে। ২৮% উত্তরদাতা বলেছেন, মসজিদে সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ৫৬% উত্তরদাতা হোম কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না বা ভুল জানেন। মাস্ক কেন ব্যবহার করতে হয় এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই ১৩%। জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে সহজলভ্য মাস্কের দাম ৩০-৪০ টাকা, যা চরাঞ্চলের নি¤œ আয়ের মানুষের ক্রয়সাধ্যের অতীত। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রতিদিনই উৎপাদিত পণ্য চৎরহপরঢ়ধষ ঙভভরপব: ঐড়ঁংব ১৩ (১ংঃ ঋষড়ড়ৎ), গবঃৎড় গবষড়ফু, জড়ধফ ২, ঝযুধসড়ষর, উযধশধ-১২০৭, ইধহমষধফবংয ঞবষ: +৮৮ ০২ ৫৮১৫০০৮২/৯১২০৩৫৮/৯১১৮৪৩৫/৯১২৬১৩১, ঊসধরষ: রহভড়@পড়ধংঃনফ.হবঃ, ডবন: িি.িপড়ধংঃনফ.হবঃ
বাজারজাত করতে হচ্ছে। বরং ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা বন্ধ থাকায় তারা উৎপাদনের

জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ পাচ্ছেন না। জরিপের ভিত্তিতে কোস্ট ট্রাস্ট থেকে ১১টি সুপারিশ করা হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ হচ্ছে, উপকূলীয় জেলাগুলোতে
করোনা পরীক্ষার সেবা বাড়াতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারি সংস্থাকে প্রচারণার কাজে যুক্ত করতে হবে। জনমনে সরকারি তথ্য সম্পর্কে আস্থা বাড়াতে হবে। যথাযথ স্বাস্থবিধি মেনে ক্ষুদ্র ও কৃষি উদ্যোক্তাদের উৎপাদন
চালিয়ে যাবার জন্য তাদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের পাশাপাশি তাদের পণ্য পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, এটি সারা দেশের ভোক্তাদের জন্য জরুরি। প্রচারণার কাজে ধর্মীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহন বাড়াতে হবে।
বার্তা প্রেরক: রেজাউল করিম চৌধুরী (০১৭১১৫২৯৭৯২), মোস্তফা কামাল আকন্দ (০১৭১১৪৫৫৫৯১)

LEAVE A REPLY