ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহা. মোকবুল হোসেন। তিনি বলেছেন, ডাক বিভাগ বন্ধ থাকায় অবশিষ্ট ১০ ভাগ কাজ আটকে আছে। ফলাফল ঘোষণার পর ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করা হবে কলেজে ভর্তি কার্যক্রম।
আজ সোমবার দেশের ১০টি শিক্ষাবোর্ডের অনলাইন সভা শেষে এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. মোহা. মোকবুল হোসেন। আন্তবোর্ড সভায় ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ভর্তি নীতিমালা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।
অধ্যাপক মোহা. মোকবুল হোসেন বলেন, ৭ মে’র মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাকালীন অবরুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সে সময়সীমার পরিবর্তন হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল আন্তশিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে অনলাইন সভা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সীমিত আকারে গণপরিবহন চালু হলে এবং পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলে ২০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে আমরা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করতে পারব।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ৯০ ভাগ কাজই আমরা শেষ করে ফেলেছি। ১০ ভাগ কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় রেজাল্টের কিছু উপকরণ ডাকবিভাগের কাছে থেকে গেছে। তারা আমাদের তা সরবরাহ করতে পারেনি। বোর্ডের চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে শিক্ষা সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডাকবিভাগে থাকা পরীক্ষার উপকরণ শিক্ষাবোর্ডে সরবরাহ করতে। তাহলে শিক্ষাবোর্ডের গোপনীয় শাখায় সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি বেধে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে রেজাল্টের বাকি কাজটুকুও আমরা শেষ করে রাখতে পারব।
এদিকে, আজ সকালে দেশের শিক্ষাবোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের মধ্যে আন্তবোর্ড সভা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, অন্যান্য বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এক মাস ২০ দিনের মধ্যে কলেজে ভর্তির কাজ শেষ করতে হয়। সেখানে এ বছর মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে কলেজে ভর্তির কাজ শেষ করা হবে। আর যেসব পরীক্ষার্থী ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করবে, তাদের ফলাফল যদি পরিবর্তিত হয় এবং তারা যদি মেধাভিত্তিক তালিকায় আসতে পারে, সেক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তির জন্য সেসব কলেজে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে। সেক্ষেত্রে ৩০ দিনের জায়গায় ২০ দিনের মধ্যে পুনর্নিরীক্ষণ ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সভার সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহা. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে বাংলাদেশের ১০টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, কলেজ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অনলাইন সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক মোকবুল হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থাকলে এইচএসসি পরীক্ষার শিডিউল আরো পরিবর্তন হবে। আর যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয় সেক্ষেত্রে আন্তবোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৩১ মে থেকে পরীক্ষা শুরু করার। পরীক্ষা শুরু করার সব প্রস্তুতিই আমাদের আছে। আর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যেহেতু বিলম্ব হচ্ছে, ফলে রেজাল্ট দিতেও দেরি হবে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সমস্যা হবে না। এবার যেহেতু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভর্তি করা হবে, সেখানেও শিক্ষার্থীর অনেকটা সময় সাশ্রয় হবে। আমরা যদি আগস্ট মাসে গিয়েও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের কাজ শেষ করতে পারি, তাহলেও তেমন সমস্যা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে একাডেমিক সেশন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা তেমন একটা হবে না। তবে মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিশ্চয় তাদের বিষয়ে নির্দেশনা আসবে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘লকডাউনের পর থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও সংসদ টেলিভিশন সিলেবাসভিত্তিক অনলাইন শিক্ষা পাঠদান চলছে। শিক্ষার্থীদের আমরা সেসব ক্লাস ফলো করতে বলেছি। এ ছাড়া বড় বেশ কিছু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের উদ্যোগে অনলাইন পাঠদান চালু করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে সংযুক্ত আছে। আর গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের বিশেষ ভাবনা রয়েছে। তাদের এই পিছিয়ে পড়াকে কীভাবে এগিয়ে আনা যায়, সে চিন্তাভাবনা আমরা করব। তাদের যাবতীয় ক্ষতি আমরা পুষিয়ে নেব। তবে গ্রামের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আমরা অনুরোধ করছি, তারা যেন টেলিভিশনের শিক্ষা কার্যক্রম দেখে সে অনুযায়ী অনুশীলন করে যায়। কোনো রকম হতাশা যেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে না থাকে।