ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজার রায়ের পর ‘মাঠ দখলে রাখতে’ সিলেটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্যে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী যুবককে প্রকাশ্যে রাজপথ দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে।
যদিও গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের মিছিলে থাকা এসব অস্ত্রধারীকে, যারা স্থানীয়ভাবে ‘গানফাইটার’ হিসেবে পরিচিত, ‘না দেখার’ কথা বলছেন পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।
গতকাল দুপুর ২টার দিকে ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় দেন। রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকি আরো চার আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনায় থাকা সিলেট নগরীতে রায়ের পর পরই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান নিয়ে সুদৃঢ় অবস্থান নেয়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সিলেট জেলা পরিষদে অবস্থান নেয়, অন্যদিকে আদাল পাড়ায় অবস্থান নেয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
দুপুর আড়াইটার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপক্ষ অন্যপক্ষের বিরুদ্ধে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় অন্তত চারজনকে অস্ত্র হাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মিছিলের ভেতরে দেখা গেছে।
এদের মধ্যে প্রথমে তিনজনের মাথায় হেলমেট ছিল আর একজন ছিল খালি মাথায়। এদের মধ্যে একজনের হাতে ছিল দোনলা বন্দুক। প্রথমে সে মাথায় হেলমেট পরে এলেও পরে তা খুলে ফেলে।
অস্ত্রধারীদের পরিচিত ও আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই দোনলা বন্দুক হাতে থাকা যুবকের নাম মুনিম আহমেদ। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থক।
সংঘর্ষের সময় সিলেট জেলা ছাত্রদল নেতা সৈয়দ মোস্তফা কামরুল এবং আরো একজনের মাথায় গুলি লাগে, আহত হন অনেকে। কামরুল বর্তমানে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, দিনভর সংঘাত এড়াতে তৎপর ছিল পুলিশ। অস্ত্রধারীদের বিষয়টি পুলিশের চোখে পড়েনি বলে দাবি করেন তিনি।
‘তবে যেহেতু অনেকেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলছেন, তাই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে,’ যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মিছিলে কোনো অস্ত্রধারীকে ‘চোখে পড়েনি’ বলে দাবি করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছাকাছি কেউ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন করেননি। তারপরও সাংগঠনিকভাবে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে খালেদা জিয়ার সাজার রায়ের প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সামসুজ্জামানের নেতৃত্বে নগরীর হকার পয়েন্ট থেকে মিছিল হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ সদস্যরা বেশ কয়েকটি টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।