বিএনপি ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তিনটি কারণে মন খারাপ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো অস্থিরতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো অস্থিরতা নেই বলে মন্তব্য তিনি বলেন, ‘আমরা লাফা লাফি করছি না। আমাদের মধ্যে কোনো অস্থিরতা নেই। কারণ, আমাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণ ক্ষমতায় রাখতে পারে, জনগণ ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে পারে।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই যে লাফালাফি করছেন, রায়ে ব্যানানা রিপাবলিকের অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণ অংশ পড়েননি? আমার মনে হয় পড়েছেন। পড়েই নীরবতা পালন করছেন। এই নীরবতার মানে হচ্ছে, আপনারা এই অংশ মেনে নিয়েছেন।’
বিকেলে সচিবালয়ে শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের চলমান ভয়াবহ বন্যা সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে জানানো ও রাষ্ট্রপতির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সরকার ও দলীয় অবস্থান রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। সরকার ও দলীয় প্রধান হিসেবে এটা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব।
ষোড়শ সংশোধনীর রায় পরিবর্তন করতে সরকার প্রধান বিচারপতির ওপর চাপ প্রয়োগ করছে—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কে কাকে চাপ দিয়ে কী করছে—এই গুজব কোথা থেকে আসছে? ওই পদের কাউকে চাপ দিয়ে কিছু করানো যাবে? এ কথা বলে তো তাদের ছোট করা হচ্ছে।’
বিএনপি ও মির্জা ফখরুলের তিন কারণে মন খারাপ
বিএনপি ও দলটির মহাসচিবের তিন কারণে মন খারাপ বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘প্রথম কারণ, ষোড়শ সংশোধনী রায়ে নতুন একটি ইস্যু পেয়ে এখান থেকে ফায়দা পাওয়া যাবে মওদুদ আহমদ পরামর্শ দেওয়ার পর বিএনপিতে জগাই-মাথাই শুরু হয়ে গেছে। আজকে সেই রঙিন খোয়াবের জমিন ক্রমেই মরুময় হয়ে যাচ্ছে।’
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে সেতুমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ আগস্ট ভোরে আরেকটা ১৫ আগস্ট, আরেকটা একুশে আগস্টের মতো জঙ্গিবাদী হত্যাযজ্ঞ ঘটানোর পরিকল্পনা পণ্ড হওয়া। ওই দিন ৫০০ লোক হত্যার পরিকল্পনা ছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল। আর মন খারাপের তৃতীয় কারণ জনগণের অবরুদ্ধতার মুখে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কাটতে না পারা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন করে কী লাভ হয়েছে? জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন না করত, তাহলে আরেকটি খুনি চক্র জিয়াকে হত্যার দুঃসাহস দেখাত না। যে বুলেট শেখ হাসিনাকে, শেখ রেহানাকে এতিম করেছে। সেই বুলেট খালেদা জিয়াকে বিধবা করেছে। হত্যার রাজনীতি থেকে আপনারাও রেহাই পাননি।’
নন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বঙ্গভবনে বুধবার রাতে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁদের এই সাক্ষাতের পর আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সেখানে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি।