ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ ও সংশোধন করে সরকার তাদের পছন্দের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তাতে সরকারের ক্ষমতায় থাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় আওয়ামী লীগে যে উন্মত্ততার ঝড় বইছে তা যেন থামছেই না। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা বিচার বিভাগকে ন্যক্কারজনকভাবে আক্রমণ করে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বেআইনিভাবে আওয়ামী নেতারা বৈঠক করে চাপ প্রয়োগ করে যখন তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, এখন রাষ্ট্রপতিকে ব্যবহার করে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ ও সংশোধনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পাঁয়তারা করছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে।’
বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে নিয়ে শুধু একজন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন করাই এর মূল উদ্দেশ্য বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী নেতারা ও সাবেক দুজন বিচারপতি যেভাবে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, ইতিমধ্যে আওয়ামী নেতারা যেভাবে বিচার বিভাগের সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছেন তাতে দেশে ও দেশের বাইরে দেশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রের শত্রু।’
৯৭ অনুচ্ছেদ অপপ্রয়োগ এবং সংসদে বিল উপস্থাপন করে এ অনুচ্ছেদ সংশোধনের কোনো অপচেষ্টা সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান রুহুল কবির। তিনি বলেন, ‘সরকারের এ উদ্যোগ রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নিলে গোটা বিচার বিভাগকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে।’
এ সময় সারা দেশে নারী, শিশু, স্কুল-কলেজের ছাত্রী ও তরুণীদের চলন্ত গাড়িতে পৈশাচিক নির্যাতন ও নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগও করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘চালের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ন্যূনতম ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে তা হলো আপনাদের উন্নয়নের নমুনা। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল বেআইনিভাবে যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, নিত্যপণ্যসহ সব পণ্যের দাম যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে—এটা হলো আপনাদের উন্নয়নের নমুনা।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, ‘গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিএনপি যে বিপ্লব সাধন করেছিল সে অবকাঠামো এখন ধ্বংস হয়ে গেছে। আপনারা নতুন নতুন সড়ক নির্মাণ দূরে থাক, বিএনপি যেসব রাস্তা করে গিয়েছিল আপনারা সেগুলো মেরামত পর্যন্ত করতে পারেননি। ফলে হাওর ও উত্তরাঞ্চলে বন্যায় মানুষের অকৃষিকাজের কোনো সুযোগ নেই। সে জন্য লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার আগে আপনারা বলেছিলেন ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন। জনগণের সাথে এ প্রতারণা ঢাকবার জন্যই সন্ত্রাসের অন্ধগলিতে উন্নয়নের রাস্তা হারিয়ে ফেলেছেন। এ জন্যই আপনারা দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক তা চান না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পান।’