স্টাফ রিপোর্টার,ভোলা নিউজ২৪ডটকম॥ ভোলায় যৌতুকের দাবীতে নববধূকে পাষবিক নির্যাতন ও মারধর করেছে পাষন্ড স্বামী মোঃ হানিফ। গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধু আমেনা বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে স্বামী হানিফ জোরপূর্বক বাড়ীতে নিয়ে গেলে খবর পেয়ে নববধূর মা ও চাচী ওই বাড়ীতে গেলে তাদেরকেও মারধর করে হানিফ। গত মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ডোমপট্টি এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ মাস আগে ভোলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ডোমপট্টি এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মোঃ হানিফ (২৭) এর সাথে বাপ্তা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মধ্য বাপ্তা গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেনের মেয়ে আমেনা বেগমের ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পাষন্ড স্বামী মোঃ হানিফ আমেনা বেগমকে শ্বশুর বাড়ী থেকে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। আমেনা বেগম বিষয়টি তার পিতা মোঃ বিল্লাল হোসেন ও মা তাসলিমা বেগমকে জানায়। যৌতুকের ৩ লক্ষ টাকা হানিফের দাবীকৃত সময়ের মধ্যে দিতে না পারায় আমেনা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে পাষন্ড স্বামী হানিফ। এ ঘটনার পর আমেনার পিতা বিল্লাল হোসেন মেয়ের সুখের জন্য ধারদেনা করে জামাই হানিফকে ৫০ হাজার টাকা দেয়। ওই ৫০ হাজার টাকায় হানিফ সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাই আমেনাকে বাকী টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এর কিছুদিন পর আমেনাকে বাকী টাকা এনে দেওয়ার জন্য আবারও মারধর করে। স্বামীর নির্যাতন-অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমেনা সংসারের সুখের জন্য বাপের বাড়ী থেকে মাঝে মধ্যেই টাকা এনে হানিফকে দিতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পাষন্ড স্বামী হানিফ যৌতুকের জন্য স্ত্রী আমেনা বেগমকে চাপ প্রয়োগ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমেনা বেগম যৌতুক আনতে অস্বীকার করলে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) হানিফ আমেনা বেগমকে পাষবিক নির্যাতন ও ব্যাপক মারধর করে। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমেনার চাচা আল আমিন ওই বাড়ীতে গিয়ে আমেনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরের দিন স্বামী হানিফ হাসপাতালে গিয়ে আমেনাকে বেডে একা পেয়ে জোরপূর্বক বাসায় নিয়ে আবারও নির্যাতন করে। পরে আমেনার মা তাসলিমা বেগম ও চাচি বিবি হালিমা বেগম ওই বাড়ীতে গেলে হানিফ তাদেরকেও মারধর করে। পরে আমেনার চাচা আল আমিন ৯৯৯ হেল্প লাইনে কল দিয়ে পুলিশের সহায়তায় আমেনা বেগম, তাসলিমা বেগম ও বিবি হালিমা বেগমকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে হানিফ আমেনা বেগম ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে আমেনা বেগমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
স্বামীর নির্যাতনে আহত নববধূ আমেনা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী হানিফ যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্ন সময় মারধর করতো। স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ও সংসারের সুখের জন্য বাপের বাড়ি থেকে একাধিকবার টাকা এনে স্বামী হানিফকে দিয়েছি। তারপরও সে আমাকে টাকার জন্য মারধর করেছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ হানিফরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।