স্টাফ রিপোর্টা।।
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পরীক্ষার্থীদের রিজার্ভকৃত অটোতে প্রধান শিক্ষককে না উঠানোর কারণে আট পরীক্ষার্থীকে মারধর করেছে এক প্রধান শিক্ষক। এতে আট পরীক্ষার্থীসহ মোট ৯জন আহত হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গোডাউনের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন ফারজানা আক্তার, লিমা আক্তার, রাবেয়া আক্তার, নিলুফা বেগম, সোনিয়া বেগম, হাফসা আক্তার, রাফিয়া বেগম, মো. রাশেদ ও অটো ড্রাইভার মো. জামাল উদ্দিন। আহত পরীক্ষার্থীরা উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব নলগড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবছর দাখিল পরীক্ষার্থী দিচ্ছেন।
মাদ্রাসার শিক্ষক ও আহত পরীক্ষার্থীরা জানান, সকালে প্রতিদিনের ন্যায় তারা রিজার্ভ অটোতে মাদ্রাসার কাছের চৌমুহনী থেকে দৌলতখান আবি আব্দুল্লাহ কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় পশ্ববর্তী নলগড়া শরিফ বাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাছে গেলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান শরিফ তাদের অটোকে দাড় করাতে বলে। পরীক্ষার্থীরা অটো দাড় করিয়ে সিট খালি নেই বললে প্রধান শিক্ষক তাদেরকে গালামন্দ করেন এবং তাদেরকে দেখিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। এ অবস্থায় তারা সেখান থেকে পরীক্ষা দিতে চলে যায়। পরবর্তীতে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার উত্তর জয়নগর ৩নং ওয়ার্ডের গোডাউনের কাছে আসলে ওই প্রধান শিক্ষক একটি মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের অটোর সামনে গিয়ে পথ রোধ করে। এবং তখন তার সাথে আরও একজন লোক ছিল।
এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক মিজান ও তার সহযোগী মিলে অটোর ড্রাইভার ও পরীক্ষার্থী ছাত্রীদের মারধর করতে থাকে। এতে অটোতে থাকা সাত ছাত্রী, এক ছাত্র ও অটো ড্রাইভার জামাল উদ্দিন আহত হয়। এসময় তাদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে প্রধান শিক্ষক পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে তারা ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছে। আহতদের মধ্যে এদের মধ্যে পরীক্ষার্থী ফারজানা আক্তার ও অটো ড্রাইভার জামাল উদ্দিনের অবস্থা গুরুতর।
অপরদিকে এ ঘটনায় স্থানীয়রা পরীক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান শরিফ বলেন, আমি অটো ড্রাইভারকে চর-থাপ্পর দিয়েছি। কিন্তু কোনো ছাত্রীকে মারধর করি নাই। মাদ্রসা ও স্কুল পাশাপাশি হওয়ায় তাদের সাথে আমার প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ রয়েছে। এজন্যই তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী সোনিয়া বেগমের মা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এবং অভিযুক্ত মিজানুর রহমানেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আল ছিদ্দিক বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি। এবং তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।