ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : ভোলার সদর উপজেলায় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে অন্যের রাইস মিল ভেঙ্গে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বটতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিমের নেতৃতে নাজমুল কাজির পক্ষে জনসম্মুখে লোকজন দিয়ে সৌদি প্রবাসী আকবর হোসেনের ক্রয়কৃত ৪ শতাংশ জমিতে থাকা রাইস মিল ভেঙ্গে নতুন দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়। জমিতে থাকা রাইস মিলটি জমির পূর্বের মালিক গিয়াস উদ্দিন মাষ্টারের। সে চলতি বছরের প্রথম দিকে জমিটি আকবর হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ইউনিয়নের বটতলা বাজার উত্তর-পূর্ব মাথায় ২০-২৫জন লোক নিয়ে গিয়াস উদ্দিন মাষ্টারের রাইসমিল ঘরটি ভেঙে নতুন করে ঘর তুলেছে। এবং স্থানীয় ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁর নেতৃত্বে জমি মালিক দাবিদার মো. নাজমুল কাজি লোকজন নিয়ে এ ভাংচুর ও দখল করে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, গিয়াসউদ্দিন মাষ্টার চলতি বছরের প্রথম দিকে জমি ও মিল ঘরটি স্থানীয় মো. আকবর হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন।
জমির ক্রয় সূত্রে বর্তমান মালিক আকবর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, মো. সেলিম তাঁর চাচাত ভাই। কিন্তু সেলিমের সাথে তাদের সত্রুতা রয়েছে। এ শত্রুতার জের ধরে জোর করে সে আমার জমি দখল করিয়েছেন।
জমির মূল মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন মাষ্টার বলেন, তিনি দক্ষিণ বালিয়া মৌজার (দাগ নম্বর-১৪৩৩, এসএ খতিয়ান নম্বর ৬৩৪) ৪ শতাংশ জমি আবদুল ওয়ারেস ওরফে ওয়ারেস মেম্বারের নিকট ক্রয় করেছেন। সেখানে তিনি ১৫ বছর আগে রাইস মিল বসান। ওই সময় বিদ্যুত না থাকায় ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে মিল চালিয়েছেন। পরে মিল ঘরটি আমির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর নিকট বছরে ১২হাজার টাকায় ভাড়াও দিয়েছেন। চলতি বছরে জমিটি সৌদিবাসী মো. আকবর হোসেনের নিকট সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি সকলের সামনে আকবরকে জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গত সোমবার স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সেলিম তাঁর লোকজনকে দিয়ে নাজমুল কাজীর পক্ষে নিয়ে জমিটি দখল করিয়ে দেয়। দখলের সময় পুরাতন মিল ঘরটি ভেঙে মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে একটি নতুন ঘর তুলেছেন।
মো. নাজমুল কাজী বলেন, ‘আমার বাবা মৃত নাছির আহমেদ কাজী ওয়ারেস মেম্বারের নিকট থেকে ৭ শতাংশ জমি কিনেছেন। কিন্তু আমার বাবা কখনই ৪ শতাংশের বেশি জমি ভোগ দখল করতে পারেনি। ওই অবস্থায় আমাকে ছোট রেখে তিনি মারা যান। এখন আমি বড় হয়েছি। তাই আমি আমার বেদখলীয় জমি দখল নিয়েছি।
ইউপি সদস্য মো. সেলিম জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মৃত ওয়ারেছ মেম্বার যে জমির মালিক ছিলেন, তার থেকে বেশি জমি বিক্রি করেছেন। তাই সকল ক্রেতারা জমি বুঝে পাননি। তাই আমি নাজমুল কাজীর বেদখল জমির দখল নিয়ে দিয়েছি, কারণ তাঁদের জমি বেদখল ছিল।’
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছগির মিঞা বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা শুনিনি, কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।