ভোলার আলোচিত জোরাখুন ।। মানববন্ধ,বিক্ষোভ,স্বারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলন

0
1133

মোঃ আফজাল হোসেন ॥ ভোলায় বহুল আলোচিত জোরাখুনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন,বিক্ষোভ মিছিল,ম্বারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতর পরিবারসহ এলাকাবাসী। এসময় আন্দোলনকারীরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের পালাতে সহযোগীতা হিসেবে ভোলা সদর থানার পুলিশকে দায়ী করেন। যে কারনে বিচারপ্রার্থীরা তদন্তের জন্য সিআইডিকে দেয়ার দাবী করেছেন।

আজ ২০জুন বেলা ১১টায় ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নে জোরাখুনের ঘটনায় নিহত মাসুম ও জাহিদের পরিবার এবং গ্রামবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে নিহতদের সন্তান,স্ত্রী,আত্বীয়-স্বজনসহ গ্রামের শত শত নারী ও পুরুষরা এই মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন। এসময় তারা বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ও লেখা প্লে­কার্ড বহন করেন। একই সাথে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ প্রচার স¤পাদক ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা,জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ যুগ্ন আহবায়ক আবিদুল আলম, নিহত জাহিদ এর বড় ভাই মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ রুবায়েত হোসেন সুসান,গালীব ইবনে ফেরদৌসসহ বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

বক্তারা পুলিশের তীব্র সমালোচনা করে বলেন,পুলিশের সহযোগীতায় হত্যাকারীরা ভোলা থেকে পালিয়েছে।এছাড়া তদন্তে গাফলতি করা হচ্ছে। হত্যার ৪দিন পর পুলিশ তদন্তে গিয়েছে। পুলিশ দায়সারা তদন্ত করে চলে এসেছে। বিপ্লব মোল্লা বলেন,আমার ভাই বাবুল মোল্লাকেও হত্যা করা হয়েছে। আমরা মাসের পর মাস রাজপথে আন্দোলন করেছি। অসহায় এই পরিবারটিকে যেন তা না করতে হয়। আশা করছি পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি গুরুক্ত দিয়ে দেখবেন। বক্তারা আরো বলেন, পুলিশ সহযোগীতা না করলে কোন ভাবেই আসামীরা হত্যা করে ভোলা থেকে চলে যেতে পারে না।

এদিকে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিলসহকারে ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যায় মানববন্ধনকারীরা। সেখানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক এর কাছে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। একই সাথে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী তুলে ধরা হয়। বলা হয় পুলিশ হত্যাকারীদের ধরার চেস্টা করছে না। পুলিশের সহযোগীতায় এই হত্যাকান্ডের আসামীরা পালিয়েছে। তাই সুষ্ঠ তদন্তর জন্য মামলাটি সিআইডিতে দেয়ার দাবী করা হয়। সব কথা শুনে স্বারকলিপি গ্রহন করে জেলা প্রশাসক বলেন,আপনার শান্ত হন এই মামলার সুষ্ঠ তদন্তর জন্য সিআইডিতে দেয়ার সুপারিশ করা হবে। নিহতর পরিবার যাতে বিচার পায় তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

অপরদিকে স্বারকলিপি শেষে নিহত ভাইসহ তার পরিবার ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় লিখিত বক্তব্য পাট করে নিহত মো: জাহিদুল ইসলাম এর বড় ভাই মো: জাকির হোসেন। এসময় তিনি ভোলা সদর থানা পুলিশের চরম গাফলতির কথা তুলে ধরেন। বলা হয় আসামী হওয়ার পরেও পুলিশ হত্যাকারীদের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে পালাতে সহযোগীতা করেছে হত্যার কান্ডের পরের দিন সকালে। ৪জন পুলিশ হত্যাকারী মামুনের বাসার সামনে ছিলো। তাদের সামনেই হত্যাকারী মামুনের স্ত্রী বাসা থেকে বের হয়ে পালিয়েছে। পুলিশ তাদের পালাতে সহযোগীতা করেছে।

শুধু তাই নয়,হত্যাকান্ডের দিন রাতে পুলিশ মামুনের স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। অথচ ঐ রাতেই তাকে ছেড়ে দিয়ে পরের দিন আবার পালাতে সাহায়্য করেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনকারীরা আরো বলেন,১২লাখ টাকা কোথায় গেছে আর কারা নিয়েছে এই টাকা। পুলিশ মামুনের দুই ছেলেকে আটকের পর ৩দিন রিমান্ডে নিয়েছে। দুইদিন কথা শিখিয়ে তৃতীয়দিন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী করিয়েছে। হত্যার সাথে কারা কারা জড়িত আছে তা সব বের হবে যদি সিআইডি হত্যার ঘটনা সুন্দর ভাবে তদন্ত করে তা হলে। তারা বলেন ভোলার আলোচিত এই জোরাখুনের ঘটনার সুষ্ঠ বিচার আর আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে আরো কঠোর কর্মসুচী দেয়া হবে।

 

 

LEAVE A REPLY