স্টাফ রিপোর্টার,ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। ভোলার ভেদুরিয়ায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাথে পুনরায় গোপন সম্পর্ককে কেন্দ্র করে মামা বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ৮জনকে পিটিয়ে জখম করেছে ভাগ্নেসহ তার বাহিনী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার (২২ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খেয়ারমাথা এলাকার আমিনুদ্দিন মিয়া বাড়িরতে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
আহতদের সূত্রে জানা যায়, ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের আমিনুদ্দিন মিয়ার বাড়ির বাসিন্দা মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মিলনের মেয়ে তাসলিমাকে কয়েক বছর আগে মিলনের বোন রানু বেগমের ছেলে গিয়াস উদ্দিন বিয়ে করে। বিয়ের কয়েক মাস পর গিয়াস উদ্দিন তাসলিমাকে তালাক দেয়। তালাকের পর গিয়াস উদ্দিন তার খালা চরফ্যাশনের বাসিন্দা রেণু বেগমের মেয়ে সালমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর কয়েক মাস তাদের সংসার সুখে কাটায়। এরপর গিয়াস উদ্দিন সালমা বেগমের পরিবারের কাছে কয়েক দফা যৌতুক দাবী করতো। গিয়াস উদ্দিনকে সালমা পরিবার কয়েকবার যৌতুক দিলেও গিয়াস উদ্দিন পুনরায় যৌতুকের দাবীতে সালমাকে প্রায়ই মারধর করতো। এরই মধ্যে গিয়াস উদ্দিনের সাথে তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তাসলিমার সাথে গোপনে সম্পর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে গিয়াস উদ্দিন প্রকাশ্যই তাসলিমার বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে সালমা ও তার পরিবার গিয়াস উদ্দিনকে বাধা দেয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য সালমার পিতা সিরাজ ও মাতা রেনু বেগম জামাই গিয়াস উদ্দিনের বাসায় যায়।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়াস উদ্দিন সালমার পিতা মাতার সাথে খারাপ আচরণ করে ও সালমাকে বেদম মারধর করে জখম করে। পরে সালমাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে রেনু বেগম মেয়ে সালমাকে গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে আসে। এতে উত্তেজিত হয়ে গিয়াস উদ্দিন রেনু বেগমকে মারধর করে। এসময় রেনু বেগমের একটি হাত ভেঙ্গে যায়। ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে রেনু বেগম তার পিতার বাড়িতে ভাই জিলনের কাছে আশ্রয় নেয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় গিয়াস উদ্দিন ও তার সাবেক শ্বশুর মোঃ মিলন। এই ঘটনার জেরধরে রোববার সকালে মিলনের ভাই ঝিলনের স্ত্রী মিনারা বেগম গৃহস্থলী কাজের জন্য গেলে পুকুরের ঘাটলায় গেলে মিলনের মেয়ে সালমা পুকুরে কাজ করতে বাধা দেয়। এ নিয়ে মিনারা ও সালমার মধ্যে ঝগড়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিলন তার সাবেক জামাই ও ভাগিনা গিয়াস উদ্দিনকে খবর দেয়। পরে দুপুরের দিকে গিয়াস উদ্দিন,তার ভাই মহিউদ্দিন,বাবুল,জুয়েল,শফি,মিলনের জামাই জহির,সোহেল,মেয়ে সালমা সহ ১৫/১৬ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী ঝিলনের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা ঝিলন, তার স্ত্রী মিনারা, ছেলে হাসনাইন, মেয়ে ঝর্না এলোপাথারী মারধর করে। এসময় ঝিলেনর ভাই কবির ও তার স্ত্রী আমিরুন বেগম বাঁধা দিতে গেলে গিয়াস বাহিনী তাদেরকেও এলোপাথারী মারধর করে। গিয়াস বাহিনী ঝিলন ও কবিরের ঘরে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর কর। পরে স্থানীয়রা এসে আহতদেরকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদের মধ্যে হাসনাইন, মিনারা ও ঝর্ণার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ভেলুমিয়া ফাঁড়ি থেকে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে ঝিলনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিন ও মিলনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) ছগির মিয়া জানান, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।