ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।।
ভোটের দিন বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে নাশকতা চালাতে পারে বলে শেষ সময়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এমন খবর আছে, বিএনপি-জামাত জোট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে। আগামীকাল সারা দেশে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি ভুয়া ব্যলট পেপার ও ভুয়া বুথ তৈরি করে ভিডিও বানিয়ে গুজব সৃষ্টি করতে পারে।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দায়িত্বেও রয়েছেন।
সোশাল মিডিয়ায় গুজব ঠেকাতে ‘সরকারের নির্দেশনায়’ মোবাইল ফোনে থ্রি জি ও ফোর জি ইন্টারনেট ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে বিটিআরসি।
নির্বাচনে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যদের নির্দেশও দিয়েছেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনাবাহিনীও নেমেছে।
গত কয়েকদিনে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, “বিগত ৪৭ বছরে এমন পিসফুল পরিবেশ দেখিনি। ঢাকার বাইরে সবাই আশ্বস্ত যে এবার সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হবে।”
এইচ টি ইমাম বলছেন, সারাদেশে নৌকার পক্ষে ‘অভূতপূর্ব গণজোয়ার’ দেখে ভোট বানচালের চেষ্টা চালাতে পারে বিএনপি জোট।
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি নোয়াখালীতে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য কিছু সরঞ্জাম পুলিশ জব্ধ করেছে। সেখানে স্থানীয় বিএনপি প্রার্থী মওদুদ আহমদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আগাম অভিযোগপত্র প্রিন্ট করে রেখেছেন।”
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগই প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট কারচুপির পরিকল্পনা করে রেখেছে। ব্যালট বাক্সও আগে থেকে ভরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইমাম বলেন, “এটা হাস্যকর, কেননা ব্যালট বাক্সগুলো নির্বাচন কমিশন থেকে সশস্ত্রবাহিনীর প্রহরায় তারা নিয়ে যাচ্ছেন। যেখান থেকে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে আমাদের যাতায়াত তো দূরের কথা, প্রবেশাধিকারই নেই।
“কারা, কোথায় পাঠাচ্ছেন, কীভাবে পাঠাচ্ছেন, সেটা আমরা টেলিভিশনে দেখেছি। তাছাড়া স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তো পোলিং এজেন্টদের আগেই (ভোটগ্রহণ শুরুর আগে) দেখানো হবে।”
বঙ্গবন্ধু এভিউনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার এর আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমণ্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান।
তিনিও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে বিএনপি-জামায়াত জোট নাশকতা চালাতে পারে।
রহমান বলেন, “রাজনৈতিকভাবে চরম দেউলিয়া ও ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট জনগণের সমর্থন লাভে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
“মনোনয়ন বাণিজ্য, স্বাধীনতাবিরোধী দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দানের কারণে তারা (জনগণ) দুর্নীতিবাজ তারেক-খালেদার নেতৃত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তারা সংঘাত-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।”
গুজব ছড়িয়ে নাশকতা চালানো হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে তা মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতারা।
রহমান বলেন, “৩০ ডিসেম্বর জনগণের ভোটের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে জাতির ভবিষ্যৎ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে, না কি আবারও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কবলে পড়ে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা মুখ থুবড়ে পরবে, তা নির্ধারণের দিন আগামীকাল।”
তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বলেন, “নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত আমাদেরকে কিন্তু থাকতে হবে। ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে হবে এবং নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত আমাদের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে।”
নৌকার জয়ে দৃঢ় আশাবাদী জানিয়ে রহমান বলেন, “যে ফলাফলই আসুক, আমরা তা মেনে নেব।”