ভোলায় আগুনে পুড়ে গেছে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,ক্ষতিগ্রস্থ্য ২০কোটি টাকা আহত ১৫

0
914

মো: আফজাল হোসেন/আরিফ উদ্দিন রনি/অমি আহমেদ/আমিনুল ইসলাম ।। ভোলার শহরের চকবাজার, মনিহারী পট্টি ও খালপাড় সড়কে স্মরণকালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ২০কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক দোকান ঘর সম্পূর্ণ এবং আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। দমকল বিভাগের ৭টি ইউনিট প্রায় ৪ ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। আগুন নিয়ন্ত্রন আনতে গিয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যসহ ১৫জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

রাত পৌনে ১টায় খালপাড়ের একটি দোকান থেকে প্রথমে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। পরে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানগুলোতে। প্রথমে ভোলা দমকল বিভাগের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ভোলার খালে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় তাদের কাজ বাধাগ্রস্থ হয়।

আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মনিহারীপট্টির বিভিন্ন দোকানে রং,স্প্রীড,পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। পর্যায়ক্রমে ভোলার অন্যান্য উপজেলার দমকল বিভাগের আরো ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। খালে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দমকল বাহিনীর লোকজন ভোলা কোর্ট মসজিদ পুকুরের পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালায়।

দমকল বাহিনীর সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ী,শহরের সাধার মানুষ,সাংবাদিকরা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে। শেষ পর্যন্ত ভোলার পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেনের নেৃতত্বে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও আগুন নেভানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। পুলিশ সুপারসকল থানার ওসিদের ডেকে আনেন নিরাপত্তার স্বার্থে। শুধু তাই নয়,এবারই প্রথম দেখা গেছে,পুলিশ সদস্যদের ঝুকি নিয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যদের সাহায্য করতে। পুলিশের প্রত্যেক সদস্য সারারাত পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে কাজ করে গেছেন।যা উপস্থিত থেকে তদারকি করেছেন পুলিশ সুপার মো: মোকতার হোসেন নিজেই।

এ প্রতিবেদককে পেয়ে পুলিশ সুপার চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,রাতে বার বার ফোন দেয়ার পরেও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ফোন রিসিফ করেনি। শেষ পর্যন্ত কোন উপায় না দেখে থানার ওসিকে বলা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের নিয়ে ঐ গাড়ীতে করেই দ্রুত চলে আসতে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা যদি ফোন না ধরে ঘুমায় তা হলে কি ভাবে চলবে।

অপরদিকে প্রায় ৪ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। এরই মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখায় মনিহারীপট্টি, চকবাজার,খালপাড়ার সড়কের শতাধিক দোকান ভস্মিভূত হয়। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থদের সূত্রে জানা গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রন আনতে গিয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যসহ ১৫জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। অনেকের ধারনা বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে আসনে ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবদুল হালিম,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মৃধা মুজাহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।জেলা প্রশাসক খালের অবস্থা দেখে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন,পানি যখন প্রয়োজন তখন খালের এই অবস্থা। যে কোন মুল্যেই হোক খালকে রক্ষা করতেই হবে। কোন অজুহাত নয়। ভোলাকে বাচাঁতে খালের বিকল্প নেই। এছাড়া রাতে ব্যবসায়ীদের দেখা গেছে তাদের দোকানের মালামাল অন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে।

এদিকে বিভিন্ন পলিথিন ও জালের দোকানের কারনে আগুনের লেলিহান ছিলো বেশি। মো: লিটেনর পরিথিনের দোকানে আজ বিকাল পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ঐ সময় ভোলা পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের তালিকা করতে আশাদের সামনেই এঅবস্থা দেখা গেছে। গতরাতে দেখা গেছে এই ঐ দোকানের দ্বীতিয় তলায় জাল ও পলিথিন জ্বলতে। আর এর মাধ্যমে বুঝা গেছে যে,নিষিদ্ধ পলিথিন কি ভাবে বিক্রি করা হত। এসব বিষয় প্রশাসনের সচেতন হওয়া খুব জরুরী।

LEAVE A REPLY